Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

জেলা জুড়ে ভাঙা হল ব্লক কমিটি

বার বারই অভিযোগ উঠছিল পুরনোদের একটি অংশকে দলে ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে। শনিবার সেই পুরনো নেতা-কর্মীদের ফিরিয়ে আনতেই কোচবিহারে দলের ১৮টি ব্লক কমিটি ভেঙে দিল তৃণমূল

কোচবিহারে তৃণমূলের বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

কোচবিহারে তৃণমূলের বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৯ ০৪:২৪
Share: Save:

বার বারই অভিযোগ উঠছিল পুরনোদের একটি অংশকে দলে ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে। শনিবার সেই পুরনো নেতা-কর্মীদের ফিরিয়ে আনতেই কোচবিহারে দলের ১৮টি ব্লক কমিটি ভেঙে দিল তৃণমূল। দলেরই একটি অংশ অবশ্য মনে করছে, দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের অনুগামীদের সরিয়ে দিতেই জেলা জুড়ে ব্লক কমিটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শুক্রবারই দলের জেলা কমিটির সভাপতির পদ থেকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয় বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে। কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয় পার্থপ্রতিম রায়কে। যদিও তাঁরা কেউই ওই বিষয়টি মানতে নারাজ। বিনয় বলেন, “রাজ্য কমিটির নির্দেশের ব্লক কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বিধানসভা ভিত্তিক বিধায়কেরা প্রত্যেকটি এলাকায় সংগঠনের কাজ করবেন।” দিন পনেরোর মধ্যে নতুন করে কমিটি তৈরির কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
প্রায় ২২ বছর দলের কোচবিহার জেলার সভাপতির দায়িত্ব ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। জেলায় তৃণমূলের ১৮টি ব্লক কমিটি রয়েছে। যার অধিকাংশই রবীন্দ্রনাথ অনুগামী বলে পরিচিত। এ দিন কোর কমিটির বৈঠকে জানানো হয়, দলের রাজ্য সভাপতি তথা পর্যবেক্ষক সুব্রত বক্সির নির্দেশে ব্লক কমিটি ভেঙে দেওয়া হল। দলীয় সূত্রের খবর, ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে কোর কমিটির বৈঠকে সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ হয়। কোর কমিটির সদস্যদের একটি অংশ দাবি করেন, যারা লোকসভা ভোটে লিড দিতে পেরেছেন, এমনকি এখনও কাজ করছেন তাঁদের সরানো ঠিক হবে না। অন্য আরেকটি অংশ অবশ্য দাবি করেন, কর্মীরা এলাকায় এলাকায় আক্রান্ত হচ্ছেন। সেই সমর্থকদের থানায় নিয়ে গিয়ে অভিযোগ করার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘প্রত্যেক ব্লক সভাপতি নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে রয়েছেন। তাঁদের রেখে লাভ কী?’’ পরে অবশ্য প্রত্যেকেই রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে সহমত হন।
তৃণমূলের অন্দরে কোচবিহারে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ও বর্তমান কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়-সহ দলের একাধিক বিধায়কের বিরোধ কারও অজানা নয়। লোকসভা ভোটে হেরে যাওয়ার পরে সেই বিরোধ আরও তীব্র হয়। দলীয় সূত্রের খবর, দলের ওই অংশ এ বারে রবীন্দ্রনাথকে সরানোর দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হন। শেষ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথকে সরিয়ে দেওয়া হয়। রাজ্য নেতৃত্ব মনে করছে, এই কঠিন সময়ে নতুন মুখ তুলে আনায় দল অনেকটাই সংগঠিত হবে। তৃণমূলের নিচুতলার কর্মীদের একটি বড় অংশ অবশ্য জেলা নেতাদের গ্রামে গ্রামে চাইছেন। তাঁদের অভিযোগ, প্রায় প্রতিদিন দলের কর্মীদের বাড়িতে হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটছে। ব্লক নেতারা তো বটেই, জেলা নেতাদের কাউকেই এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েকজন কর্মীর কথায়, “নেতারা পাশে দাঁড়ান। না হলে দল কী করে করব!”
এ দিনের বৈঠক থেকে অবশ্য জানানো হয়, গণসংযোগ যাত্রা করবেন দলের নেতারা। শীঘ্রই ওই কর্মসূচি ঠিক করে জানিয়ে দেবেন তাঁরা। সেই সঙ্গে মহকুমা ধরে ধরে কর্মিসভাও করা হবে। নেতাদের একটি অংশ বৈঠকে দাবি করেন, নানা জায়গায় হামলা নিয়ে পুলিশ সুপার ও থানায় বিক্ষোভ স্মারকলিপি দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আরেক অংশ জানিয়ে দেন, এমন হলে দুর্বলতা প্রকাশ পাবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলেরই এক নেতার কথায়, “এখন আর কোনও কিছু লুকিয়ে লাভ নেই। সামনাসামনি লড়াই করতে হবে।”
বিজেপি অবশ্য তৃণমূলের এই পদক্ষেপকে কটাক্ষ করেছে। বিজেপির কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতি রাভা বলেন, “মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন। তৃণমূলের চলে যাওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। তাই মিটিং করে কিছু হবে না।”

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy