সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র
ভোররাতে হাড় কাঁপানো ঠান্ডা। সেই শীতে হার না মেনে যাঁরা শনিবার টাইগার হিলে গেলেন সূর্যোদয় দেখতে, তাঁদের জন্য বাড়তি ছিল পেঁজা তুলোর মতো বরফ কুচি। এই মরসুমে এই প্রথমবার দার্জিলিং শহরের এত কাছে তুষারপাত হল। আর যাঁরা ঠান্ডাকে হারাতে পারেননি, তাঁদেরও বিমুখ করেনি প্রকৃতি। রোদ ঝলমলে ম্যালে দাঁড়িয়ে তাঁরাও দেখলেন ব্যান্ড স্ট্যান্ডের পাশ থেকে দিগন্তে দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। খবর এসেছে, তুষারপাত হয়েছে দার্জিলিঙের সান্দাকফুতে। বরফে ঢেকে গিয়েছে সিকিমের লাচুং এবং লাচেনও। যা আশা দেখিয়েছে ব্যবসায়ীদের। সাধারণত জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই শেষ হয়ে যায় শীতের মরসুম। পর্যটন ব্যবসায়ীদের ধারণা, পাহাড়ে বরফের এই মরসুম বজায় থাকলে এ বারে অন্তত ১৫ শতাংশ ব্যবসা বাড়ার সম্ভাবনা। আবহাওয়া দফতরের ইঙ্গিত, সোমবার থেকে আবহাওয়া একটু পরিষ্কার হলে ফের সামনে সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকে বরফ পড়ার অনুকুল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
চলতি সপ্তাহে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে তুষারপাত। সান্দাকফু, লাচেন ছাড়াও সিকিমের সমস্ত উঁচু জায়গায় বরফ পড়েছে। শনিবার সেই তালিকায় যোগ হয়েছে টাইগার হিল। এতেই পর্যটনের বুকিং আবার বাড়তে শুরু করেছে। একটি পর্যটন সংস্থার তরফে সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘গত সপ্তাহ থেকেই ভিন্ রাজ্য, এ রাজ্যের প্রচুর পর্যটকের ফোন পাচ্ছি। তাঁরা জানতে চাইছেন, কোন সময় বরফ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ সেই সময় বুকিংয়ের অনুরোধ আসছে।’’
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক গোপীনাথ রাহা জানান, সিকিম এবং উত্তরবঙ্গে বাতাসের উপর নিম্নচাপ অক্ষরেখা তৈরি হয়েছে ১ জানুয়ারি থেকে। তার প্রভাবেই ৩ জানুয়ারি সমতলে বৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ের বেশ কিছু জায়গায় বরফ পড়েছে। শনিবার থেকে নিম্নচাপ অক্ষরেখা পূর্বের দিকে একটু সরে অবস্থান করছে। তার সঙ্গেই তৈরি হয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। তাতে এদিনও দার্জিলিং এবং সিকিমের উঁচু জায়গায় বরফ পড়েছে। গোপীনাথ বলেন, ‘‘মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়া একটু করে পরিষ্কার হবে। তারপরে ফের বৃষ্টি এবং তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।’’
দার্জিলিং শহরে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের কিছুটা হলেও আশাভঙ্গ রয়েছে। অনেকেই বলছেন, শুক্রবার আবহাওয়া দেখে মনে হচ্ছিল, শনিবারই বরফ পড়বে। কিন্তু ‘সাধ না মিটিল’। তবে তাঁদের মন ভাল করে দিয়েছে রোদ ঝলমলে দিন আর কাঞ্চনজঙ্ঘা। তাতে শৈলশহর দেখতে বার হয়ে পড়েছেন পর্যটকেরা। দার্জিলিং চিড়িয়াখানার ঢোকার মুখে লম্বা লাইন। বাইরের গুমটিগুলিতেও বসার জায়গা নেই। হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে ঢোকার আগে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের পায়চারি আর নেকড়ের হাই তোলা দেখে মুগ্ধ খুদেরা। কেউ ভিডিয়ো করতে ব্যস্ত। কেউ স্থানীয় পোশাকে ছবি তুলছেন। এক চালক তো বলেই দিলেন, ‘‘আগের দিন বৃষ্টি হলে পরদিন ব্যবসা ভালই জমে।’’
কলকাতা থেকে এসেছেন পায়েল সামন্ত ও হিমেলী দাস। ফেরার কথা ছিল শুক্রবার। বৃষ্টির জন্য যাওয়া হয়নি। তাই শনিবার ঢুঁ মেরে গেলেন চিড়িয়াখানায়। খানিক আগে টাইগার হিলও ঘুরে এসেছেন। সেখানে তুষারপাত দেখেছেন।
তবে হতাশ হতে হল সাপঘরের কাছে এসে। শীত ঘুমের জন্য সরীসৃপের দেখা মিলল না!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy