তারকনাথ কর্মকার।
চলন্ত টোটো থেকে লাফ দিয়ে নিজের ‘অপহরণ’ ঠেকাল এক খুদে পড়ুয়া। তার আগে টোটোর নম্বর-সহ খুঁটিনাটি অন্য জিনিস মনে করে নিয়েছিল বালুরঘাট শহরের নেপালিপাড়ার পঞ্চম শ্রেণির তারকনাথ কর্মকার।
পুলিশ জানায়, তার উপস্থিত বুদ্ধিতে শনিবার রাতে অভিযুক্ত টোটোচালক গোপাল মণ্ডলকে শহরের চকভবানী কালীবাড়ির মোড় থেকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃত গোপাল নামাবঙ্গি এলাকার বাসিন্দা। ডেপুটি পুলিশ সুপার ধীমান মিত্র জানান, ওই পড়ুয়ার মায়ের লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। রবিবার পুলিশ ধৃতকে বালুরঘাট আদালতে পেশ করলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানায়, অপহরণের চেষ্টার ঘটনাটি ঘটে ১৩ ফেব্রুয়ারি। বালুরঘাট হাইস্কুলের পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া তারক স্কুল ছুটির পরে দুপুর আড়াইটে নাগাদ টোটো ধরতে স্কুলের সামনের মোড়ে দাঁড়িয়েছিল। তারকের অভিযোগ, কয়েক দিন ধরেই গোপাল তাকে অনুসরণ করছিল। সেই দিনও রাস্তায় গোপালকে দেখতে পেয়ে তারক নিজেকে আড়াল করে ফেলে। কিন্তু সে দিন স্কুলের মোড়ের রাস্তায় অন্য কোনও টোটো ছিল না। অভিযোগ, ফের রাস্তায় নামতেই তারকের হাত টেনে গোপাল জোর করে টোটোতে তুলে নেন।
এ দিন বালুরঘাট থানায় তারকের মা মমতা অভিযোগ করেন, গোপাল তাঁর ছেলেকে টোটোতে উঠিয়ে বাড়ির রাস্তার বদলে অলিগলি ধরে শহরের শেষপ্রান্ত রঘুনাথপুর এলাকায় জাতীয় সড়কে ওঠে। তারক টোটোচালক গোপালের জানতে চায়, তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে? গোপাল তাকে চুপ করে বসে থাকতে বলেন। বেগতিক দেখে ওই পড়ুয়া টোটো থেকে লাফ মারে। তার পরে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশের কাছে অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই টোটোচালক তাকে খুঁজে না পেয়ে এলাকা ছাড়লে লুকানোর জায়গা থেকে বেরিয়ে অন্য টোটো ধরে বিকেলে তারক বাড়ি ফেরে। তাকে অপহরণের চেষ্টার কথা সে দিন তারক বাড়ির কাউকে কিছু বলেনি।
ওই পড়ুয়ারা বাড়ির লোকেদের দাবি, শুক্রবার গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়ে তারক বন্ধুদের কাছে সব বলে। সহপাঠীরাই তারকের বাড়িতে গিয়ে অভিভাবককে ওই ঘটনার কথা জানায়। ওই পড়ুয়ার বাবা নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ জানান, ওই দিনই বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশও তারকের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্ত টোটোচালককে ধরতে নজরদারি শুরু করে। শনিবার রাত ৮টা নাগাদ ধরা পড়ে গোপাল।
পুলিশের দাবি, জেরায় বছর চব্বিশের গোপাল ঘটনার কথা স্বীকার করে জানান, পারিবারিক কারণে টাকার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। সেই কারণে তারককে অপহরণ করে টাকা আদায়ের ফন্দি করেছিলেন।
তবে তারকের মা বলেন, ‘‘ওই ঘটনার পিছনে বড় চক্র রয়েছে।’’ পুলিশকে ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে তিনি দাবি জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy