বাড়ির কাছে আমবাগানে পাওয়া যায় ধনঞ্জয় সরকারের ক্ষতবিক্ষত দেহ। — নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে ১০০ দিনের কাজের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ করেছিলেন তিনি। তা নিয়ে মামলাও চলছে। এই আবহে বিজেপির সেই ‘কার্যকর্তা’র ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হল বাড়ির কাছ থেকে। বুধবার গভীররাতে এই ঘটনা ঘটেছে মালদহের গাজোলের বৈরগাছি এলাকায়। শুক্রবার ওই পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার পরই প্রকাশ্যে আসে এই খবর। যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান।
বুধবার রাত ২টো নাগাদ বাড়ি থেকে ২০০ মিটার দূরে একটি আমবাগানে পাওয়া যায় বৈরগাছির বাসিন্দা ধনঞ্জয় সরকার (৫০)-এর ক্ষতবিক্ষত দেহ। ধনঞ্জয়ের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ওই খুন করিয়েছেন তৃণমূলের দখলে থাকা বৈরগাছি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুবোধ সরকার। কারণ হিসাবে তাঁরা জানিয়েছেন, সুবোধের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন ধনঞ্জয়-সহ গ্রামের কয়েক জন। ধনঞ্জয়ের ছেলে পরিতোষের অভিযোগ, ‘‘গ্রামের মেলায় সুবোধ সরকারের সঙ্গে বাবার কথা কাটাকাটি হয়। ধস্তাধস্তিও হয়। তার পর এই ঘটনা ঘটেছে। বাগানের মধ্যে বাবাকে কেটে ফেলা হয়েছে।’’
খুনের কারণ হিসাবে পরিতোষের ব্যাখ্যা, ‘‘৪-৫ মাস আগে আমরা একটি পুকুর কেটেছিলাম। কিন্তু সেই পুকুর দেখিয়ে প্রধান সুবোধবাবু টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন পঞ্চায়েত থেকে। তা নিয়ে বাবা মামলা করে। এর পর থেকে সুবোধবাবু হুমকি দিতেন। খুনের হুমকিও দিয়েছেন উনি।’’ এ নিয়ে গাজোল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ নিহতের রক্তের নমুনা-সহ বেশ কিছু জিনিস সংগ্রহ করেছে। শুক্রবার বিকেলে অভিযুক্ত প্রধানকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গাজোল থানা। বিষয়টি নিয়ে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যাওয়া সুবোধ বলেন, ‘‘ধনঞ্জয়ের সঙ্গে আমার খারাপ সম্পর্ক ছিল না। আমাদের মধ্যে ভাল সম্পর্কই ছিল। কালীপুজোর মেলায় কথা কাটাকাটি হয়েছিল। এর পরে কী হয়েছে, তা জানি না। যা বলা হচ্ছে, তা মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা হচ্ছে। ওঁদের বাড়িতে আমি মোটেই হুমকি দিতে যাইনি।’’
বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। নিহতকে দলের ‘কার্যকর্তা’ বলে দাবি করে বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলের একাংশের আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। তাই তাঁরা বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত চাইছেন। ধনঞ্জয় সরকারকে খুনের পিছনে রয়েছে তৃণমূলের চক্রান্ত। কারণ তিনি প্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। চুরিচামারি যাতে ধরা না পড়ে, সে জন্যই খুন করা হয়েছে।’’
তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘এটা মর্মান্তিক ঘটনা। পুলিশ তদন্ত করছে। পুলিশ দোষী মনে করলে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করবে। ধৃতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে তিনি যে দলেরই হন না কেন।’’
পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তও করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy