পাহাড়ে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানে দীর্ঘদিন পরে নতুন করে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ‘ত্রিপাক্ষিক’ বৈঠকের দিনক্ষণ জানানো হয়েছে। বুধবার দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা জানান, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে তাঁকে পাঠানো একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ২ এপ্রিল দিল্লির নর্থ ব্লকে ওই বৈঠক হবে। গোর্খাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য ওই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।
জিটিএ’র তরফে ওই বৈঠক ত্রিপাক্ষিক কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। কারণ, ওই চিঠিতে কোথাও ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের উল্লেখ করা হয়নি। তা ছাড়া, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজেও ওই বৈঠকে থাকবেন না। এর আগে, ২০২১ সালে এক বার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের কথা জানানো হয়েছিল। অভিযোগ, সেই বৈঠকে মূলত পাহাড়ে বিজেপির সহযোগী দলগুলিকে ডেকেই আলোচনা করা হয়। রাজ্যের তরফে এক আধিকারিককে পাঠানো হলেও, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি।
জিটিএ মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘সরকারি ভাবে এখনও আমাদের বৈঠকের বিষয়ে জানানো হয়নি। সাংসদ একাই একটি চিঠি পেয়েছেন বলে জানাচ্ছেন। সেখানে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক বলেও উল্লেখ করা নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেও বৈঠকে থাকছেন না। তা হলে ওই বৈঠকের গুরুত্ব কী?’’ গোর্খা জনশক্তি ফ্রন্টের তরফেও জানানো হয়েছে, এই বৈঠক ত্রিপাক্ষিক কি না, এই বিষয়টি স্পষ্ট নয়। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
দার্জিলিঙের সাংসদের দাবি, দ্বিতীয় দফায় ওই ‘ত্রিপাক্ষিক’ বৈঠক হতে চলেছে। সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পাহাড়, তরাই, ডুয়ার্সের বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিনিধি এবং রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা থাকবেন। সাংসদ বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবিপূরণে বদ্ধপরিকর। সকলকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মধ্যে দিয়েই তা করতে চায়। এই বৈঠক ফলপ্রসূ হবে এবং এই অঞ্চলের মানুষের ন্যায় মিলবে বলে আমি আশাবাদী।’’
তৃণমূলের পাহাড়ের নেতৃত্ব এ নিয়ে এখনই স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি। তাঁদের কাছেও এ নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও বার্তা পৌঁছয়নি। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা (পাহাড়) সভানেত্রী শান্তা ছেত্রী বলেন, ‘‘এখনও কিছু জানি না। তাই ওই বৈঠকের বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। বিষয়টি নিয়ে ঠিক কী বলা হচ্ছে, তা খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’ বিজেপির সহযোগী জিএনএলএফ ওই সিদ্ধান্তকে অবশ্য স্বাগত জানিয়েছে। দার্জিলিঙের বিধায়ক নিরজ জিন্বা বলেন, ‘‘পাহাড়, তরাই এবং ডুয়ার্সের রাজনৈতিক স্থায়ী সমাধানের জন্য কেন্দ্রের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। দার্জিলিঙের সাংসদও এ ব্যাপারে সক্রিয় ছিলেন।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)