বিনয় তামাং। ফাইল ছবি।
পাহাড়ে দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন করে লাভ নেই। হলে ত্রিস্তরীয় নির্বাচনই হোক। এই আর্জি জানিয়ে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি লিখেন জিটিএ সভাসদ বিনয় তামাং। তাঁর দাবি, দ্বিস্তরীয় নির্বাচন হলে জিটিএ-র আইন লঙ্ঘন করা হবে।
২০০০ সালের জুনে শেষ বার পাহাড়ে একস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল। তখন পার্বত্য পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন সুবাস ঘিসিং। তার পরে, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হলেও, পাহাড়ে হয়নি। গত দার্জিলিং জেলায় গিয়ে সেখানেও পঞ্চায়েত ভোট করানোর কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই দার্জিলিঙে পঞ্চায়েত ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। প্রশাসন সূত্রে খবর, সেই মতো শুরু হয় দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতিও। গত বছরের অগস্টে রাজ্য নির্বাচন কমিশনও বিজ্ঞপ্তি জারি করে পাহাড়ের গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির এলাকার সীমানা পুনর্বিন্যাস এবং সংরক্ষণের তালিকা তৈরির কথা বলে।
কিন্তু প্রাক্তন জিটিএ প্রধান বিনয়ের দাবি, হলে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটই হোক পাহাড়ে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার মহম্মদ আরিজ আফতাবকে লেখা চিঠিতে তাঁর যুক্তি, সমতলে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা রয়েছে। আবার জিটিএ চুক্তির সময় পাহাড়ে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। ২০১৭ সালে কালিম্পং আলাদা জেলা হয়ে যাওয়ায় দুই জেলায় এ বার ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট করাতে কোনও বাধা নেই বলেই দাবি করেছেন বিনয়। তিনি দার্জিলিং এবং কালিম্পঙের জেলাশাসককেও এই চিঠি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। বিনয় বলেন, ‘‘আমি চাই, পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন হোক। কারণ, এত বছর নির্বাচন না হওয়ায় পাহাড়ের বাসিন্দারা নানান সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তবে দ্বিস্তরীয় নির্বাচন করে কোনও লাভ নেই। তাই আমি মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি লিখে বলেছি, তিনি যাতে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখেন। কারণ আইন অনুযায়ীও পাহাড়ে দ্বিস্তরীয় নির্বাচন করা যাবে না। একটু দেরি হলেও ত্রিস্তরীয় নির্বাচনই হোক।’’
অন্য দিকে, প্রশাসনিক মহলের একাংশের যুক্তি, ডিজিএইচসি বা দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিল থাকাকালীন সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সেখানে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট হবে না। তা সংবিধানেও অন্তর্ভুক্ত আছে। এখন ডিজিএইচসি নেই, রয়েছে জিটিএ। তাদের আইনে পুরো পঞ্চায়েত ভোট হতেই পারে। কিন্তু ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট করাতে গেলে সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন। তাই দুই স্তরে ভোটের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, দার্জিলিং জেলায় নির্বাচনী প্রস্তুতিতে কড়া নজর রাখছে স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দফতর এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। চলতি পরিস্থিতিতে এত দিন বাদে পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকে। কারও পর্যবেক্ষণ, পাহাড়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের শক্তি বৃদ্ধির সুবাদে পঞ্চায়েতে তারা কিছু আসন পেলে সেখানে রাজনৈতিক সমীকরণ অনেকটা বদলে যেতে পারে। আবার কারও যুক্তি, পাহাড়ের পরিষেবা নিশ্চিত করার প্রশ্নেও এই ভোট খুব জরুরি। সড়ক, জল, নিকাশি ইত্যাদি বিষয়ে দীর্ঘ কাল ধরেই নানা দাবি জানিয়ে আসছেন পাহাড়বাসী। গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি স্তরে জনপ্রতিনিধি থাকলে তাঁদের কাছে মানুষ দাবিদাওয়া জানাতে পারবেন। কাজের সুযোগও তৈরি করা যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy