প্রতি বছর ভাঙনে তলিয়ে যায় বাড়ি। এ বার সেই বিপদ এড়াতে লাগানো হচ্ছে ভেটিভার ঘাস। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
নদী ভাঙন ঠেকাতে এবার দাওয়াই ‘ভেটিভার’ ঘাস। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কোচবিহারের ৮টি ব্লকের ৫৭ কিমি এলাকার মাটির বাঁধ ও পাড়ে ওই ঘাস লাগানোর পরিকল্পনা হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে ২২ কিমি এলাকায় ওই কাজ শুরু হয়েছে। ৬ জুলাই পর্যন্ত তা চলবে। পরের ধাপে বাকি ৩৫ কিমি এলাকার নদীর পাড় ও বাঁধে ঘাস লাগানো হবে। প্রশাসন সূত্রের খবর, দক্ষিণবঙ্গে নদী ভাঙন ঠেকাতে এই পদ্ধতি কার্যকরী হয়েছে জানার পরেই ভাঙন প্রবণ জেলা বলে পরিচিত কোচবিহারের জন্য ওই পরিকল্পনা নেওয়া হয়। জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “নার্সারিতে ওই ঘাসের চারা তৈরি করে ভাঙন ঠেকানোর কাজ শুরু হয়েছে। প্রতি কিমি-র জন্য খরচ ধরা হয়েছে আড়াই লক্ষ টাকা।’’ ঘাস বেড়ে উঠলে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আয়ের সংস্থানেও তা ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
কোচবিহারের সব ব্লকেই একাধিক নদী রয়েছে। ভাঙনের সমস্যাও রয়েছে। তিস্তা থেকে রায়ডাক, সুটুঙ্গা থেকে তোর্সা নদীর ভাঙন থেকে গ্রাম রক্ষার জন্য একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বিস্তীর্ণ এলাকায় মাটির বাঁধ করা হয়েছে। কিন্তু নদীর গতিপথ বদল ও অতিবৃষ্টির মত সমস্যায় ওই বাঁধের স্থায়িত্ব নিয়ে চিন্তা বেড়েছে প্রশাসনের কর্তাদের। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে জেলার ১২টি ব্লকের মধ্যে দিনহাটা ১, শীতলখুচি, মাথাভাঙা ২ , কোচবিহার ১ ছাড়া বাকি ৮টি ব্লকে ওই কাজের রূপরেখা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। মাথাভাঙা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু তালেব আজাদ বলেন, “হাজরাহাট, কুর্শামারি এলাকায় নেন্দা, সুটুঙ্গার ভাঙন ঠেকাতে ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। আমরা এ নিয়ে আশাবাদী।” হলদিবাড়ির বক্সিগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকাতেও তিস্তার ভাঙন রোধে সম্প্রতি ভেটিভার ঘাস লাগানো হয়।
ভেটিভার মূলত দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতে চাষ হয়। গাছের শিকড় রোপণের এক বছরের মধ্যে তা মাটির গভীরে ছড়িয়ে যায়। ফলে বাঁধের মাটি ধসে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। পাশাপাশি নদীর পাড়েও ভাঙনের সম্ভবনা কমে যায়। এছাড়াও ঘাসের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে তেল, ব্যাগ, জুতো, খেলনা তৈরির কাজেও ব্যবহার করা যায়। হুগলিতে স্বনির্ভর গোষ্ঠী সদস্যদের ওই প্রশিক্ষণের ভাবনাও হচ্ছে। উদ্ভিদ বিদ্যার শিক্ষক সৌনক সরকার বলেন, “ভেটিভার ভূমিক্ষয় ,বন্যা প্রতিরোধে দারুণ সহায়ক। তেল, সুগন্ধি, ওষুধ তৈরির কাজেও লাগে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy