পরিণাম: ফুলমালা হালদারের দেহকে ঘিরে কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবারের লোকজন। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মূল গেটের বাইরে। ছবি: জয়ন্ত সেন
ভর্তি হয়েছিলেন কর্মবিরতির দু’দিন আগে। মারা গেলেন কর্মবিরতির তিন দিন পর। আর তার পরেই অভিযোগ উঠল, এই তিন দিনে কার্যত কোনও চিকিৎসাই হয়নি ফুলমালা হালদারের (৫৫)। পরিবারের লোকেদের দাবি, এ দিন সকালে যখন তাঁর বুকে ব্যথা ওঠে, বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ডাক্তারদের কাউকে ডেকে দেওয়া হয়নি। দুপুরে মায়ের মৃতদেহ মহিলা বিভাগ থেকে যখন নিয়ে যেতে দেওয়া হয়, স্ট্রেচারের উপরে উপুড় হয়ে কেঁদে ফেলেন ছেলে এবং মেয়ে। তাঁদের কথায়, “কর্মবিরতির ডামাডোলে মা হাসপাতালে ভর্তি থেকেও চিকিৎসা পেলেন না। বেঘোরে প্রাণ গেল।”
মালদহ জেলার বামনগোলা ব্লকের পাকুয়াহাটের বাসিন্দা ফুলমালাদেবী। পারিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে তাঁর বুকে ব্যথা শুরু হলে প্রথমে ব্লকেরই মোদিপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজে। ছেলে গোকুল হালদার বলেন, “ভর্তির পর থেকে জুনিয়র ডাক্তাররাই মাকে দেখছিলেন। বারবার এসে দেখে গিয়েছেন তাঁরা। সিনিয়র চিকিৎসকেরাও বলেছেন, ঠিক চিকিৎসাই ঠিক চলছে। মঙ্গলবার সকালেও জুনিয়র চিকিৎসকরাই মাকে দেখেছেন। তার পর থেকেই কর্মবিরতি শুরু হয়। আর কোনও জুনিয়র ডাক্তারকে ওয়ার্ডে দেখা যায়নি।”
গোকুলের অভিযোগ, এই ক’দিনে সিনিয়র চিকিৎসকেরাও সে ভাবে রোগীদের দেখেননি। তাঁর আরও অভিযোগ, ‘‘এ দিন সকাল থেকে মা বুকের ব্যথায় ছটফট করছিলেন। বারবার বলা হলেও কোনও ডাক্তারকে তাঁরা ডাকেননি। এ ভাবেই যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে সকাল সাড়ে দশটায় ১০টা ২৫ মা চলে গেলেন।’’
তবে এই নিয়ে লিখিত কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি হাসপাতালে। কেন? গোকুল ও ননীবাবুর মতে, “অভিযোগ করে আর কী হবে? মাকে তো আর ফিরে পাব না!” হাসপাতালের সুপার অমিত দাঁ বলেন, “চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে কোনও রোগী মারা গিয়েছেন বলে কোনও অভিযোগ পাইনি। তবে জুনিয়ররা কর্মবিরতিতে সামিল হলেও সিনিয়ররা কিন্তু পরিষেবা দিচ্ছেন। অভিযোগ এলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy