৮ মার্চ থেকে মণিপুরের কুকি অধ্যুষিত এলাকাগুলি দিয়ে যাওয়া জাতীয় সড়ক সম্পূর্ণ অবরোধমুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু তার ২৪ ঘণ্টা আগে কুকিদের সব যৌথ মঞ্চ দফায়-দফায় বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিল, পৃথক প্রশাসনের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কোনওভাবেই কুকি এলাকা দিয়ে অবাধ যাতায়াত করতে দেওয়া হবে না। এর মধ্যে, মেইতেইদের একটি যৌথ মঞ্চ আগামী কাল ইম্ফল থেকে সেনাপতি পর্যন্ত শান্তি মিছিল করার ডাক দিল। ফলে শনিবার থেকে রাষ্ট্রপতি শাসনাধীন রাজ্যে নতুন করে অশান্তির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
‘কুকি ট্রাইবাল ইউনিটি কমিটি’ কুকি অধ্যুষিত পাহাড়ি জেলাগুলির মধ্যে দিয়ে মেইতেইদের ‘ফেডারেশন অফ সিভিল সোসাইটি’র প্রস্তাবিত পদযাত্রার নিন্দা করে জানিয়েছে, দুই পক্ষের মধ্যে থাকা ‘বাফার জ়োন’ লঙ্ঘন করে শান্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে ‘উগ্রপন্থীদের’ মদতপুষ্ট ওই মেইতেই মঞ্চ। কুকি-জ়ো নেতৃত্ব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশিত ‘মুক্ত চলাচল’-এর প্রস্তাবকেও প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা স্পষ্ট জানায়, ভারতীয় সংবিধানের ২৩৯এ ধারায় কুকিদের জন্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বা পৃথক প্রশাসন গঠনের রাজনৈতিক দাবি মঞ্জুর না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে। জাতীয় সড়কেও যাতায়াত চলতে দেওয়া হবে না। তারা বলে, জাতীয় সড়ক দিয়ে নিত্যপণ্যের চলাচলে আগেও মানবিকতার খাতিরে বাধা দেওয়া হয়নি। কিন্তু জোর করে অবরোধ তুলতে গেলে অপ্রীতিকর অবস্থার জন্য কেন্দ্রই দায়ী হবে।
দিল্লিতে থাডৌ ইনপি মণিপুর (মণিপুর রাজ্যে থাডৌ সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ সংস্থা) ও মেইতেই অ্যালায়েন্সের (মণিপুরের বাইরে অবস্থিত বিভিন্ন মেইতেই সংগঠনের প্রতিনিধিত্বকারী মঞ্চ) প্রতিনিধিরা যৌথ বৈঠক করে। দুই পক্ষই মণিপুরের তফসিলি উপজাতি তালিকা থেকে ‘যে কোনও কুকি উপজাতি’-র অস্পষ্ট শ্রেণিবিন্যাস বাদ দিয়ে প্রকৃত ভূমিপুত্রদের চিহ্নিত করতে এনআরসি তৈরির দাবি জানায়।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)