আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে সুপারের চেম্বারে চিকিৎসকেরা। নিজস্ব চিত্র
এনআরএস কাণ্ডের প্রতিবাদে সারা রাজ্যের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন হাসপাতালেও চিকিৎসকদের গণইস্তফার পথেই হাঁটতে চাইছেন।
শুক্রবার আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের পঞ্চাশ জন চিকিৎসক আইএমএ-র জেলা সম্পাদক যুধিষ্ঠির দাসের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিয়ে রেখেছেন। যুধিষ্ঠির বলেন, “পঞ্চাশ জন চিকিৎসকের গণ ইস্তফাপত্র আমার কাছে জমা রয়েছে।’’ চিকিৎসকদের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়, “প্রশাসন যদি এখনও উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেয় কিংবা আবারও একজন চিকিৎসক নিগৃহীত হন, তবে আমরা সমস্ত চিকিৎসকরা যে যার কর্মক্ষেত্র থেকে ইস্তফা দেব। চিঠি তৈরি আছে। শুধু তারিখ বসানোর অপেক্ষা।” হাসপাতাল সুপার চিন্ময় বর্মণ বলেন, “এ দিন সকালে চিকিৎসকরা আমার কাছে এসে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তারপর তাঁদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আপাতত তাঁরা পরিষেবা চালু রাখছেন। তাদের গণ ইস্তফাপত্র দেওয়ার ইচ্ছার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’ ফালাকাটা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটা বড় অংশও ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন বলে দাবি যুধিষ্ঠিরবাবুর।
কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজেও গণইস্তফার কথা উঠেছে। শুক্রবার রাতে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন আইএমএ-র কোচবিহার জেলা শাখার কর্তারা। আইএমএ-র কোচবিহার জেলা শাখার কার্যনির্বাহী সম্পাদক শিখা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “রোগীদের কষ্ট আমরাও বুঝি। তাই এ দিন শুধু আধ ঘণ্টা প্রতীকী কর্মবিরতি করা হয়। আশা করছি দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। সেরকম পরিস্থিতি না হলে, গণইস্তফার কথা ভাবতে হবে। আমরা আলোচনা করছি।”
দুই হাসপাতালেই এ দিন বহির্বিভাগ স্বাভাবিক ছিল। সকাল থেকেই কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীদের লম্বা লাইন ছিল। হাসপাতালের একটি সূত্রের দাবি, শুক্রবার নতুন ও পুরানো রোগী মিলিয়ে বহির্বিভাগের বিভিন্ন চিকিৎসকদের কাছে আড়াই হাজারের বেশি রোগী এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে নতুন টিকিট কেটে আসেন প্রায় দেড় হাজার রোগী। কাজকর্ম স্বাভাবিক ভাবেই চলছিল। মধ্যে প্রতীকী ধর্মঘটের জন্য রোগীদের আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। সহকারী সুপার দিব্যেন্দু দাস অবশ্য দাবি করেছেন, “কর্মবিরিতির ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।” জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “মেডিক্যালে অল্প সময় প্রতীকী কর্মবিরতি ছিল শুনেছি। রোগীরা পরিষেবা পেয়েছেন। জেলার অন্যত্রও বহির্বিভাগ খোলা ছিল।” রোগীদের পরিষেবা ঠিকঠাক মেলায় স্বস্তির ছাপ সব মহলেই।
এই জেলার দিনহাটায় এনআরএসএ-র ঘটনার প্রতিবাদে কালাদিবস পালনের পাশাপাশি হাসপাতালে রোগী ও তাঁদের পরিজনদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে উদ্যোগী হলেন চিকিৎসকরা। আইএমএ দিনহাটা শাখার উদ্যোগে শুক্রবার চিকিৎসকরা রোগী ও তাঁদের আত্মীয়-পরিজনদের সহযোগিতা চান। দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসা রোগী ও তাঁদের আত্মীয় মরিয়ম বেওয়া, হানিফ রহমান, ভবেশ বর্মণরা এনআরএস-এর ঘটনায় চিকিৎসককে হেনস্তার নিন্দাও করেন। তবে পাশাপাশি, চিকিৎসকরা যাতে সঠিক ভাবে তাঁদের পরিষেবা দিতে পারেন, সে কথাও উল্লেখ করেন তাঁরা।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy