প্রতীকী ছবি।
এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী পড়াশোনার চাপে বিষাদে আত্মহত্যা করার ঘটনায় চিন্তিত শিক্ষক অভিভাবকরা। শিলিগুড়ির একটি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র ২৫ জানুয়ারি দুপুরে সাদা বোর্ডে অঙ্কও করেছে। পরে সেই বোর্ডে সময় লিখে ‘মা আই কুইট’ লিগে আত্মহত্যা করে বলে জানিয়েছে পরিবার। তাতেই হতবাক সকলে। পরিবার এবং পরিচিতদের থেকে জানা গিয়েছে, গত এক সপ্তাহ ধরে গৃহশিক্ষকদের কাছে পড়তে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। বন্ধুদের কয়েক জনের সঙ্গে কথা হয়েছে। সে আর টিউশনে যাবে না, বাড়িতে নিজেই পড়বে বলে জানিয়েছিল। তাই বলে সে আত্মহত্যা করবে, তা ভাবতে পারেনি কেউ।
সেবক রোডের একটি পাড়ার বাসিন্দা ওই ছাত্র। বাবা-মা ছেলেকে হারিয়ে দিশাহারা। মা ঘটনার পর থেকেই ঘন ঘন জ্ঞান হারাচ্ছেন। খাচ্ছেন না কিছু। তাঁকে একাধিক বার চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হয়েছে পরিবারের লোকদের। তিনিও শিক্ষিকা। ওই দিন কাজে যাওয়ার সময় ছেলে তাঁকে বলেছিল, ‘সাবধানে যেও মা। ফেরার সময়ে শিঙাড়া নিয়ে এসো।’ সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার সময় যখন শিঙাড়া নিয়ে মা বাড়ি ফেরেন, তখন সব শেষ।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে মনোরোগ চিকিৎসা বিভাগের প্রধান নির্মল বেরার বলেন, ‘‘মানসিক অবসাদের জেরেই এই ঘটনা। কখনও পরিবারের চাপ এবং মানসিক অবসাদে এই ধরনের ঘটনা হয়। জানতে পেরেছি, ওই ছাত্র পড়াশোনায় ভাল। লকডাউনে স্কুল বন্ধ। বিভিন্ন কারণে মানসিক আবসাদে ভুগছিল। টিউশন বন্ধ করে দেয়। বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছিল।’’ তিনি জানান, ঘটনার আগের দিন ছেলেটি বন্ধুদের ফোন করে বলে জানতে পেরেছেন। আত্মহত্যার আগে এ ধরনের প্রবণতা দেখা দেয়। অনেকে ধার-দেনা বাকি থাকলে মিটিয়ে দেয়। বন্ধুদের ফোন করে। অর্থাৎ, ‘আমি চলে যাব’, তাই শেষ যোগাযোগ। এটা একটা পরিকল্পনা মাফিক করে। আত্মহত্যার আগে ‘নোট’ রেখে যায়। বাড়ির কেউ চাপ না দিলেও মানসিক সমস্যার জেরেই এই ঘটনা বলে ওই চিকিৎসক দাবি করেন।
মনোবিদ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের পরামর্শ, পড়াশোনা নিয়ে যেন পড়ুয়ারা অতিরিক্ত চাপে না থাকে, সেটা দেখতে হবে। অভিভাবকদেরও তা মাথায় রাখতে হবে। স্কুল-কলেজ খোলা থাকলে ভাল হয়। বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা অবসাদ কাটাতে সাহায্য করবে। বাচ্চাদের সঙ্গে অভিভাবকদের মিশতে হবে। তাদের মনের খোঁজ নিতে হবে। এই সময়ে এটা খুবই জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy