হরিশ্চন্দ্রপুরের এই গ্রাম পঞ্চায়েতে ত্রাণের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
দুর্নীতির অভিযোগ মালদহের এক গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করলেন সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিও। অভিযোগ, আসল ক্ষতিগ্রস্তেরা বন্যাত্রাণের টাকা পাননি। তার বদলে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তাঁর ঘনিষ্ঠদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন।
হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান সোনামণি সাহার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে ওই এলাকায় ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। বন্যায় অনেকের বহু বাসিন্দার বাড়ি সম্পূর্ণ এবং আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়! এরপর রাজ্য সরকারের তরফে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ৩,৩০০ টাকা এবং সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ৭০ হাজার টাকা অর্থসাহায্য দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই টাকা পাননি বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে তাঁদের অনেকে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিছিলেন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির অভিযোগ, তাঁদের টাকা না দিয়ে সোনামণি তাঁর ঘনিষ্ঠদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে তা আত্মসাৎ করেন। এমনকি, একেক জনের নামে পাঁচ থেকে ছ’বার করে টাকা তোলা হয় বলেও অভিযোগ। অভিযোগ মেলার পরে তদন্তে নামে প্রশাসন। এরই মধ্যে প্রশাসন অযথা তদন্তে ঢিলেমি করছে বলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন রাজ্য বিধানসভার তৎকালীন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান।
প্রাথমিক তদন্তের পর রবিবার সোনামনির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন বিডিও অনির্বাণ বসু। এ প্রসঙ্গে তিনি সোমবার বলেন, ‘‘পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। এ বার পুলিশ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।’’ মালদার চাঁচলের এসডিপিও শুভেন্দু মণ্ডল প্রধানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। সব খতিয়ে দেখে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।’’
প্রধান সোনামণিকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। পঞ্চায়েতের দফতরে গেলে তাঁর ঘরে তালা ঝুলতে দেখা যায়। বাড়িতে গেলে প্রধানের ছেলে গৌরব বলেন, ‘‘বাবা-মা কেউ বাড়িতে নেই। কোথায় গিয়েছে জানি না। কিছু বলে যায়নি।’’ হাই কোর্টে মামলাকারী কংগ্রেস নেতা মান্নান বলেন, ‘‘প্রশাসন প্রধানকে তিন বার শো-কজ করলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। বন্যাদুর্গতদের টাকা না দিয়ে তা লুঠ করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy