মঞ্চে: শিলিগুড়ি থেকে শনিবার জেলায় ফিরলেন সদ্য বিজেপিতে যোগদানকারী বিপ্লব মিত্র। কুশমণ্ডির সংবর্ধনা সভায় তাঁর পাশে বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকার। অন্য পাশে জেলা সভাধিপতি লিপিকা রায়। ছবি: অমিত মোহান্ত
শাসকের চেয়ারে থেকে এত কাল জেলায় দাপটের সঙ্গে দল চালিয়েছেন বিপ্লব মিত্র। এ বারে নতুন দল। নতুন চ্যালেঞ্জ। দলবদলের পরে বিপ্লব এ দিন প্রথম নিজের জেলায় পা দেন। এখন তাঁর সামনে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ, পুরনো দল ভাঙিয়ে নিজের সমর্থন বাড়ানো। অন্য দিকে, তাঁর যাবতীয় কৌশল রুখে দিয়ে দলের ভাঙন কী ভাবে আটকাবেন, সেটা অর্পিতা ঘোষের কাছে বড় পরীক্ষা।
শনিবার শিলিগুড়ি থেকে ঘরে ফেরার আগে বিপ্লব দাবি করেন, ‘‘দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় তৃণমূল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।’’ তাঁর হাত ধরে বিজেপি এ জেলায় শক্তিশালী হয়ে উঠবে, সে কথাও জানাতে ভোলেননি তিনি। বিপ্লবের ওই হুঁশিয়ারির জবাবে অর্পিতার দাবি, ‘‘উনি এত দিন শাসক দলে ছিলেন। তাই এখনও ঘুম-ঘোরের মধ্যে রয়েছেন। ঘুম ভাঙলে বুঝতে পারবেন নিজেই নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছেন। এ জেলায় গোটা তৃণমূল দল বিপ্লববাবুর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে।’’
বিপ্লব জেলায় ফিরতেই শাসকদলে ভাঙন ঠেকাতে আরও তৎপরতা বাড়িয়েছেন অর্পিতা। এ দিন বিপ্লবকে নিয়ে প্রায় ২৫টি গাড়ির কনভয় রায়গঞ্জ পেরনোর সময় বালুরঘাটের সুবর্ণতট সভাকক্ষে বালুরঘাট পুরসভার কর্মী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে অর্পিতা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। গঙ্গারামপুর পুরসভাও বিপ্লব মিত্ররা পাবেন না বলে শাসক শিবিরের দাবি।
পাল্টা তোপ দাগতেও ছাড়েননি বিপ্লব। শনিবার জেলায় পা দিয়ে পুলিশকে নিশানা করেন তিনি, যেখানে কিন্তু মূল লক্ষ সেই অর্পিতাই। বিপ্লব বলেন, ‘‘পুলিশকে সামনে রেখে দল চালাতে চাইছেন অর্পিতা। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে কর্মী-নেতাদের আটকাতে চাইছেন। কিন্তু এ ভাবে অর্পিতা দল টেকাতে পারবেন না। জনরোষে পুলিশও একসময় সরে যেতে বাধ্য হবে।’’ এই ক্ষেত্রে তিনি কোচবিহারের সাম্প্রতিক ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। জানান, সেই জেলায় বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে তৃণমূল নেতারা জনরোষের মুখে পড়ছেন। যদিও তৃণমূলের তরফে সেই অভিযোগ খারিজ করে বলা হয়েছে, জনরোষ নয়, সব জায়গাতেই বিজেপি সমর্থকেরা গোলমাল বাঁধিয়েছিলেন। বিপ্লব আরও বলেন, ‘‘দক্ষিণ দিনাজপুরে পুলিশকে দিয়ে বিজেপি কর্মী-নেতাদের উপর চরম অত্যাচার হচ্ছে। কিন্তু আমি আসায় বিজেপির শক্তি অনেক বেড়েছে। ফলে এখন পুলিশি অত্যাচার হলে কেউ মুখ বুঁজে থাকবেন না।’’
বিপ্লবের এই চ্যালেঞ্জের জবাব দিয়েই অর্পিতার বক্তব্য, ‘‘দল কর্মীদের দিয়েই চলছে। এতই যদি ক্ষমতা তবে উনি (বিপ্লব) জেলায় বিজেপির সংগঠন বাড়িয়ে দেখান।’’ ১৮ আসন বিশিষ্ট দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের ১০ জন সদস্যকে নিয়ে দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন বিপ্লব। তাঁদের নিয়ে এ দিন জেলায় ফিরলেন তিনি। অর্পিতা বলেন, ‘‘ওই সদস্যদের অনেককে ভুল বুঝিয়ে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওঁরা তৃণমূলের টিকিটে জয়ী প্রার্থী। বাড়িতে ফিরে তাঁদের তৃণমূল কর্মীদের সম্মুখীন হতে হবে। হয় তাঁরা পদত্যাগ করুন, না হয় তৃণমূলে ফিরে আসুন।’’
বিজেপির তরফে উত্তরবঙ্গে ৮টি জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিপ্লব বলেন, ‘‘দলের জেলা সভাপতি ও জেলা নেতৃত্বের নির্দেশে মেনে আগামী কর্মসূচি ঠিক হবে।’’ তিনি জানান, আগামীতে বালুরঘাটে বড় জমায়েত করে শক্তি তিনি পরীক্ষা দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy