র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ছাত্রটির পক্ষে যাতে হস্টেলের বাকি কেউ মুখ না খোলে, সে জন্য প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। বুধবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে সে ব্যাপারে অধ্যক্ষের কাছে স্মারকলিপি দিতে যায় কলেজের ডিএসও সংগঠনের ছাত্ররা। ডিএসও-র দাবি, অভিযুক্তরা টিএমসিপি করে। টিএমসিপি-ই ছাত্রদের হুমকি দিচ্ছে, যাতে কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে বলতে হবে র্যাগিংয়ের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। বরং যে ছাত্রটি অভিযোগ করেছে তাঁর বিরুদ্ধে বলতে হবে বলে বলা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। টিএমসিপি-র তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
ডিএসও-র তরফে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানোর দাবি উঠেছে। টিএমসিপি-র উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ইউনিটের সভাপতি মৃণালকান্তি হাজরা বলেন, ‘‘এ ধরণের হুমকি দেওয়ার কোনও বিষয় ঘটেছে বলে মনে করি না। কলেজের পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। খোঁজ নিচ্ছি।’’
যে জুনিয়র বয়েজ হস্টেলের ছাত্রকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে সেখানে থাকা প্রথম বর্ষের ছেলেরা এ দিন মুখ খুলতে চাননি। কয়েকজন জানিয়েছেন, এমন কিছু ঘটেনি। তবে প্রথম বর্ষের যে ছাত্র র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন, তিনি এ দিন ক্যাম্পাসে থাকা পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়েও অভিযোগ জানান। তিনি বলেন, ‘‘এখনও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কেউ মুখ খুললে তাদের প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া হবে বলে বলা হচ্ছে। শাসক দলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকায় কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের হাতে বলেই তারা জানাচ্ছে।’’ ওই ছাত্রের দাবি, র্যাগিংয়ের ঘটনার বিষয়টি সে কারণে তিনি প্রথমে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানাননি। জাতীয় অ্যান্টি র্যাগিং সেলে ইমেলে জানিয়েছিলেন। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করে দেখতে বলা হয়। তার পর তিনি কলেজের অধ্যক্ষকে জানান। বিভিন্ন মহল থেকে তাঁকে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে ওই ছাত্রের দাবি। অভিযোগ মিথ্যে প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযোগকারী ছাত্রটি বলেন, ‘‘হস্টেলের ছাত্রদের তাই আমার বিরুদ্ধে বলতে বলা হচ্ছে।’’
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় জানান, কলেজের অ্যান্টি র্যাগিং সেল পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করে যে চার জনের নামে অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁদের হস্টেল থেকে বার করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে।
প্রথমবর্ষের ছাত্রদের রাত সাড়ে ১১টার পর কমনরুমে ডেকে র্যাগিং চালানোর অভিযোগ ওঠে। র্যাগিং-এর নামে নির্যাতন চরমে উঠলে গত ১১ নভেম্বর রাতে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের কমনরুমে ডাকা হলেও এক ছাত্র যেতে চাননি। অভিযোগ, রাত ১ টা নাগাদ হস্টেলে তার ঘরে গিয়ে দরজায় লাঠি দিতে থাকে দ্বিতীয় বর্ষের চার ছাত্র। দরজা খুললে ওই প্রথম বর্ষের ছাত্রটিকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। হস্টেল থেকে বার করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয় বলে অভিযোগ। এর পর ১৩ নভেম্বর জাতীয় অ্যান্টি র্যাগিংসেলে ওই ছাত্র অভিযোগ জানায়। ডিএসও-র তরফে সৌম্যদীপ রায় বলেন, ‘‘কলেজ কর্তৃপক্ষ কড়া না হলে এ ধরনের ঘটনা বেড়েই চলবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। কর্তৃপক্ষ এখনও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিলেন সেই নোটিস দেননি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy