বাড়ির লোকেরা জানেন, ভেন্টিলেশনে রেখে রোগীর চিকিৎসা চলছে৷ অথচ, কাজ করছে না ভেন্টিলেশন ব্যবস্থাটাই। সে কথা রোগীর আত্মীয়দের জানানোরও প্রয়োজন করেনি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার সকালে ওই নার্সিংহোমে এক মহিলার মৃত্যুর পরে ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়িতে। মৃত মহিলার নাম মীনা ছেত্রী (৬২)। তাঁর পরিবারের লোকজন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও অভিযোগ পাঠিয়েছেন তাঁরা৷ পৃথক পৃথক ভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ও জেলা স্বাস্থ্য দফতর৷
মীনাদেবীর বাড়ি জলপাইগুড়ি শহরের রেসকোর্স পাড়ায়। তাঁর স্বামী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক৷ তাঁর এক ছেলেও বর্তমানে পুলিশ আধিকারিক। মীনাদেবীর বাড়ির লোকেরা জানিয়েছেন, গত ৪ এপ্রিল শহরের বাবুপাড়ার একটি নার্সিংহোমে তাঁকে ভর্তি করানো হয়৷ মীনাদেবীর ছেলে রাজেশ ছেত্রী জানান, ৭ এপ্রিল তাঁর মা-কে ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়৷ এই ক’দিন সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল৷ ধীরে ধীরে তিনি সুস্থ হয়েও উঠছিলেন৷
রাজেশবাবুর অভিযোগ, ‘‘সোমবার বিকালে আচমকাই জানতে পারি, মায়ের শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ৷ তারপর জানতে পারি, মাকে ভেন্টিলেশনে রাখা হলেও সোমবার সকাল থেকেই ভেন্টিলেশন ব্যবস্থাটাই খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে৷ বিকেল পর্যন্ত এ ভাবে মা থাকলেও আমাদের একবারের জন্যও তা জানানো হয়নি৷’’ তিনি জানান, তারপর চিকিৎসকদের নির্দেশে ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা বদল করা হলেও দেখা যায় সেটাও খারাপ৷ তারপর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা নাগাদ একটা পোর্টেবল ভেন্টিলেশন সিস্টেম দেওয়া হয়৷ কিন্তু এ দিন সকালে মীনাদেবীর মৃত্যু হয়।
মীনাদেবীর আরেক ছেলে, পুলিশ আধিকারিক উদয় ছেত্রীর অভিযোগ, ‘‘দিনভর ভেন্টিলেশন সিস্টেম কাজ না করল না৷ অথচ, মাকে সেখানেই রেখে দেওয়া হল৷ এ জন্যই মা মারা গিয়েছেন৷’’ ঘটনার তদন্ত শুরু করে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশ। জলপাইগুড়ির সিএমওএইচ জানিয়েছেন, তদন্তে নার্সিংহোমের গাফিলতি উঠে এলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷
ভেন্টিলেশন সিস্টেমে সমস্যার কথা স্বীকার করে নিলেও তার জন্য মীনাদেবীর মৃত্যুর কথা মানতে চাননি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ৷
নার্সিংহোমের ম্যানেজার সুভাষচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সোমবার সারা দিন ভেন্টিলেশন সিস্টেম ভালই ছিল৷ বিকেলের দিকে সিস্টেমে একটু গোলমাল হতেই আরেকটি সিস্টেম লাগানো হয়৷ কিন্তু তাতেও অক্সিজেন কম উঠছিল বলে একটি পোর্টেবল ভেন্টিলেশন সিস্টেম লাগিয়ে দেওয়া হয়৷ এবং রাতে শিলিগুড়ি থেকে নতুন ভেন্টিলেশন সিস্টেম লাগানো হয়৷’’ ম্যানেজারের দাবি এই প্রক্রিয়ায় মীনাদেবীর মৃত্যু হয়নি৷
মীনাদেবীর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ ৷
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy