Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

কাজ করেন মৃতও, একশো দিনে ‘দুর্নীতি’

পঞ্চায়েতের সঙ্গে জড়িত একাংশ ব্যক্তিই কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ একাংশ গ্রামবাসীর।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
তপন শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৯ ০১:১৬
Share: Save:

তপনের গোঁসাই বিশ্বাসের মৃত্যু হয় ২০১৬ সালে, কিন্তু ২০১৮ সালে একশো দিন প্রকল্পে কাজের মজুরি পেয়েছেন তিনি। আবার লতা বর্মণ বেশ কিছু বছর ধরেই দিল্লি নিবাসী, যদিও টাকা পাওয়া আটকায়নি তাঁরও। তপনের আউটিনার ১০০ দিনের প্রকল্পে এমনই বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, যারা কাজ না করে বা যাঁদের জবকার্ড না থেকেও টাকা পেয়েছেন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি থেকে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ, সকলেই।

পঞ্চায়েতের সঙ্গে জড়িত একাংশ ব্যক্তিই কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ একাংশ গ্রামবাসীর। একই দাবি জানায় বিরোধী বিজেপিও। বিক্ষুব্ধরা জানান, ব্লক ও জেলা প্রশাসনের কাছে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হবে।

এই প্রকল্পে কারা কত টাকা পেয়েছেন তা কেন্দ্রীয় সরকারের একটি ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা থাকে। সূত্রের খবর, সেখান থেকে টাকা প্রাপকদের তালিকা বার করতেই কারচুপির বিষয়টি ধরা পড়েছে। সেখানেই দেখা যাচ্ছে, জবকার্ড নেই এমন ব্যক্তির অ্যাকাউন্টেও হাজার হাজার টাকা ফেলা হয়েছে, জানালেন বিক্ষুব্ধরা। কিন্তু যাঁরা জবকার্ড নিয়ে কাজ করেছেন, তাঁদের অনেকেই আজও টাকা পাননি বলে দাবি। অভিযোগ, জবকার্ড নেই এমন অন্তত ২৫ জনের অ্যাকাউন্টকে ব্যবহার করে ওই প্রকল্পের কাজের টাকা ঢোকানো হয়েছে।

কাজ করেও টাকা পাননি ভোলা দাস, মাঞ্জনি ওঁরাওরা। তাঁরা জানালেন, তালিকায় নাম আছে দু’জন মহিলারও, সম্পর্কে দুই বোন এদের একজন বধূ এবং একজন শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের কর্মী, রয়েছেন স্থানীয় এক হাতুড়ে চিকিৎসকও। বাসিন্দাদের দাবি, তাঁদের কারও জবকার্ড নেই। যদিও অভিযুক্তদের দাবি, তাঁরা কাজ করেই টাকা পেয়েছেন। লতা বর্মণের সঙ্গে যোগাযোগ করা না গেলেও গোঁসাই বিশ্বসের টাকা পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তাঁর স্ত্রী।

নীরেন সরকার নামে এক জবকার্ডধারী এ নিয়ে বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের তরফে এক জন আমার কাছে এসে বলেন, প্রাপ্য টাকা ছাড়াও আমার অ্যাকাউন্টে অনেক টাকা দেওয়া হচ্ছে। আমার মজুরির টাকা বাদ দিয়ে বাকি টাকা পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে। ওই টাকা নাকি বাকি জব কার্ডধারীদের দেওয়া হবে। আমি তা দিয়েও দিয়েছি।’’

স্থানীয় বিজেপি নেতা নকুল বিশ্বাস এবং ভোলা বিশ্বাসের কথায়, ‘‘কর্তৃপক্ষ কৌশল করে বড়সড় দুর্নীতি করেছেন। এ জন্য তাঁরা সাধারণ কিছু স্থানীয় লোকের সঙ্গে সমঝোতা করে ওই জালিয়াতি করেছেন।’’ তাঁদের আরও অভিযোগ, পঞ্চায়েতের এগজ়িকিউটিভ নকুল সিংহ, এক তৃণমূলের কর্মী রাজীব সরকার, আউটিনা পঞ্চায়েত প্রধান পরমানন্দ বিশ্বাসের মতো কয়েক জন বিষয়টিতে যুক্ত ছিলেন। রাজীবের সঙ্গে যোগাযোগ করা না গেলেও নকুল অভিযোগ অস্বীকার করেন। প্রধান পরমানন্দ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এ বার নতুন বোর্ড গঠন হয়েছে। আগের বোর্ডের সময়ে কী হয়েছে জানি না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy