প্রতীকী ছবি।
ছেলেধরা সন্দেহে গুজবের জেরে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে চা বাগান ও সংলগ্ন এলাকার স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের উপস্থিতি ব্যাপক হারে কমতে শুরু করেছে আলিপুরদুয়ারে। তাতে চিন্তা বাড়ছে শিক্ষামহলে। পরিস্থিতি সামলাতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়া এলাকাগুলির অভিভাবকদের সচেতন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তারা।
জুন মাসের শুরু থেকে আলিপুরদুয়ার শহরের পাটকাপাড়া চা বাগান এলাকায় প্রথম ছেলেধরা গুজব ছড়ায়। যার জেরে ওই মাসের মাঝামাঝি সময়ে এক বৃদ্ধকে ধরে গণপিটুনি দেওয়ার ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে এই ছেলেধরা গুজব জেলার অন্যত্রও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। যার ফলস্বরূপ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে একের পর এক চা বাগানে ও চা বাগান সংলগ্ন এলাকায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটতে শুরু করে। গত রবিবার ফালাকাটার তাসাটি চা বাগানে গণপিটুনির শিকার হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, এমন ঘটনা রুখতে জেলা পুলিশের তরফে বিভিন্ন থানা এলাকার চা বাগানগুলিতে ব্যাপক হারে প্রচার চালানো হচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ, তারপরও গুজব থামার তো কোনও লক্ষণই নেই, উল্টে যত সময় এগোচ্ছে ততই গুজব আরও ছড়াচ্ছে। তার প্রভাবই পড়ছে চা বাগান ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত প্রাথমিক স্কুলগুলিতে। ওই স্কুলগুলির অধিকাংশতেই পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ব্যাপকহারে কমতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ। অনেক হাইস্কুলগুলির নীচু ক্লাসেও একই ঘটনা ঘটছে।
গত এক মাসে আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবরি চা বাগান ও ওই বাগান সংলগ্ন এলাকাতেই ছেলেধরা সন্দেহে একাধিক গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। মাঝেরডাবরি চা বাগান এলাকায় অবস্থিত উত্তর জিৎপুর বিএফপি স্কুলের প্রধান শিক্ষক শেখর রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘গত কয়েকদিনে আমাদের স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। অনেক পডুয়া পরীক্ষা দিতেও আসছে না। অভিভাবকদের অনেকেই ছেলেধরা আতঙ্কে ভুগছেন। তাঁদের বুঝিয়েও লাভ হচ্ছে না।’’ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি কনোজবল্লভ গোস্বামী বলেন, ‘‘হাইস্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের উপস্থিতি স্বাভাবিকই রয়েছে। কিন্তু বেশ কিছু প্রাথমিক স্কুলে উপস্থিতি কমেছে।’’ বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ-র জেলা সহ সম্পাদক প্রসেনজিৎ রায় বলেন, ‘‘জেলার অনেক চা বাগান ও সংলগ্ন এলাকার স্কুলগুলিতে এই মুহূর্তে এমন সমস্যা চলছে। অনেক ছেলেধরা আতঙ্কের জেরে অনেক জায়গায় অভিভাবকেরা নিজেরাই পড়ুয়াদের স্কুলে দিয়ে যাচ্ছেন বা স্কুল থেকে নিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে মানুষের মধ্যে আরও বেশি করে সচেতনতামূলক প্রচার প্রয়োজন।’’
আলিপুরদুয়ার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ছেলেধরা এটা একটা সামাজিক সমস্যা। তবে এ জন্য যে সব জায়গায় স্কুলে পড়াশোনার উপর প্রভাব পড়ছে, সেখানে দ্রুত সচেতনতামূলক প্রচার করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy