প্রতীকী ছবি।
নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি জেলা খাদ্য দফতর দাবি করেছিল, ধান কেনা শুরু হয়ে গিয়েছে। বাস্তবে জলপাইগুড়ি সদরে সেই ধান কেনা শুরু হল ডিসেম্বরের পয়লা তারিখে। তাতেও গোল বাঁধল ধান কেনার পদ্ধতি নিয়ে। ফলে প্রথম দিন মোটে ছ’জন চাষি ধান বেচতে পারলেন। আর এই নিয়ে বিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে এক লাফে রোজকার ধান কেনার পরিমাণ ৩০০ কুইন্ট্যাল থেকে বাড়িয়ে দেওয়া হল হাজার কুইন্ট্যালে।
এ দিন মোটে ছ’জনের কাছ থেকে ধান কেনা হবে বলেই আগে জানিয়েছিল খাদ্য দফতর। সেই খবর পেয়ে বাম-কংগ্রেসের কৃষক সংগঠনের নেতারা এ দিন হাজির হন ক্রয় কেন্দ্রে। চাষিরা গিয়ে ঘেরাও করেন আধিকারিকের ঘর। জানতে চাওয়া হয়, রোজ কতটা ধান কেনা হবে? উত্তরে ক্রয় আধিকারিক জানান, রোজ ৩০০ কুইন্ট্যাল ধান কেনা হবে। এই পরিমাণ শুনে রে রে করে ওঠেন কৃষকেরা। এক কৃষক বলেন, “প্রতিদিন মাত্র ৩০০ কুইন্ট্যাল করে ধান কিনলে তো পুরো ব্লকের ধান কিনতে বৈশাখ মাস পার হয়ে যাবে। আপনারা কি কৃষকদের সঙ্গে রসিকতা করেন, নাকি ফড়েদের থেকে কিনবেন?”
ধমকে খেয়ে রোজ ধান কেনার পরিমাণ রাতারাতি বদলে যায়। জলপাইগুড়ির সদর ব্লকের ক্রয় কেন্দ্রের আধিকারিক লিখে দেন, দিনে হাজার কুইন্ট্যাল করে ধান কেনা হবে। এই পরিমাণও যথেষ্ট নয় বলে কৃষকদের দাবি।
জেলার চাষিদের একাংশ জানাচ্ছেন, এ বারে ধানের ফলন ভাল হওয়ায় খোলা বাজারে দাম কমছে। এ দিন জলপাইগুড়ির বাজারে ধানের দাম ছিল কুইন্ট্যাল প্রতি এগারোশো টাকা। যা এই মরসুমে সর্বনিম্ন বলে দাবি। এই অবস্থায় ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি-তে ধান বিক্রি করতে পারলে তবু কিছু টাকা ঘরে আসবে। নয়তো বড় লোকসানের মুখে পড়তে হতে পারে।
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির খারিজা বেরুবাড়ি ১ নম্বর ক্রয় কেন্দ্রে ধান নিয়ে এসেছিলেন মণ্ডলঘাটের কৃষক জীবন কর্মকার। তিনি বলেন, “আজকে শুধু কাগজ জমা নিল। বলল, কুড়ি দিন পরে এসে খোঁজ নিতে যে কবে ধান কিনবে। মানে কুড়ি দিন পরে এসে আবার ঘুরতে হবে। এতদিন ধান রাখতে পারব না, ক্ষতি হলেও খোলা বাজারে বিক্রি করতে হবে।”
সিপিএমের কৃষক সংগঠনের নেতা পীযূষ মিশ্র বলেন, “খোলা বাজারে ধানের দাম কিনছে। কম দামে ধান কিনে বেশি দামে ফড়েরা সরকারি কেন্দ্রে বিক্রি করবে। পুরোটাই পরিকল্পিত।” জলপাইগুড়ি জেলার খাদ্য নিয়ামক অমৃত ঘোষ বলেন, “সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে সমস্যাটি জানার চেষ্টা করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy