‘ছপাক’ ছবির দৃশ্য।
এক বছর পেরিয়েছে। কিন্তু সে দিনের ভয়াবহ রাতের কথা ভুলতে পারেননি গোয়ালপোখরের এলাকার তরুণী। ২০১৮ সালের জুন মাসে তরুণীকে অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগ ওঠে স্বামীর বিরুদ্ধে। অ্যাসিডে তরুণী একটি চোখ খুইয়েছেন। শরীরে এখনও জ্বালা রয়েছে। তার মধ্যেই লক্ষ্মীর লড়াইয়ের ছবি দেখতে যাবেন বলে ঠিক করেছেন ওই তরুণী। আজ, শুক্রবারই মুক্তি পাচ্ছে দীপিকা পাড়ুকোন অভিনীত ছবি ‘ছপাক’। তাঁর দাবি, ‘‘এই সিনেমা আমাদের মতো নির্যাতিতাদের বাঁচার রসদ জোগাবে।’’
এখন ঘটিবাটি বেচে মেয়ের চিকিৎসা করাচ্ছেন উত্তর দিনাজপুরের এই তরুণীর বাড়ির লোক। কিছু দিন আগে সরকারি ভাবে তিন লক্ষ টাকা পেয়েছেন। কিন্তু চিকিৎসার কাছে সেই টাকা নগণ্য। এখনও ক্ষত সারেনি। যে চোখটি নষ্ট হয়েছে, সেটি ঠিক করতে হলেও প্রচুর টাকা প্রয়োজন। তরুণীর লড়াইয়ে সব সময় পাশে রয়েছেন তাঁর মা। তিনি বললেন, ‘‘মেয়েকে সুস্থ করতে চাই। স্বাভাবিক
ছন্দে ফিরে আসুক। মেয়েও চায় স্বাভাবিক ভাবে নতুন করে জীবন কাটাতে। মেয়ের এই অদম্য ইচ্ছাই বাঁচার প্রেরণা প্রেরণা।’’ একফালি জমি ছিল। চিকিৎসার জন্য তা বিক্রি করে তরুণীর বাবা এখন দিনমজুরে পরিণত। তবুও এই
অন্ধকার ঘর থেকে মেয়েকে আলোর জগতে ফেরাতে স্বপ্ন দেখছেন। তবে পড়শিরা অনেকে এগিয়ে এসেছেন। চিকিৎসার জন্য যখনই ধার চেয়েছেন। পেয়েছেন তাঁদের কাছে। জানালেন, এটাই তাঁদের বড় প্রাপ্তি।
স্থনীয় বাসিন্দা হাজিরুল ইসলাম জানান, মেয়েকে সুস্থ করে তোলার জন্য নির্যাতিতার পরিবারের এই লড়াই কুর্ণিশ জানানোর মতে। হাজিরুলেরও ইচ্ছা, ‘ছপাক’ ছবিটি দেখতে যান।
স্থানীয়দের আক্ষেপ, গোয়ালপোখর এলাকা মন্ত্রী গোলাম রব্বানির। কিন্তু মন্ত্রী কোনও দিন নির্যাতিতার পরিবারের খোঁজ নেননি। যদিও রব্বানির দাবি, ওই তরুণীর চিকিৎসার জন্য সরকারি ভাবে আর্থিক ভাবে সাহায্য করা হবে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গোয়ালপখরের দক্ষিণদুয়ারি গ্রামের বাসিন্দা মেহেবুব আলমের সঙ্গে বিয়ে হয় ওই তরুণীর। প্রথম থেকেই শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে পণের দাবিতে অত্যচার করার অভিযোগ ছিল। এই নিয়ে মামলা চলছিল। ওই তরুণী বাপের বাড়িতে থাকতেন। ২০১৮ সালের ২৭ জুন রাতের অন্ধকারে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে মেহবুব স্ত্রীর মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy