Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
sexual harassment

Sexual Harassment: ছাত্রীকে ‘মা’ ডেকে দিনের পর দিন যৌন হেনস্থা ও হুমকি! শিলিগুড়িতে অভিযুক্ত সিপিএম নেতা

শিলিগুড়ি পুরসভার মিলনপল্লি এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরী ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ত। কিশোরীকে ‘মা’ সম্বোধন করতেন বিধায়কচন্দ্র।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২২ ০৩:২৫
Share: Save:

গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলল নবম শ্রেণির এক ছাত্রী। তার অভিযোগ, পড়ানোর অছিলায় দিনের পর দিন ওই শিক্ষক যৌন হেনস্থা করেছেন। ঘটনার কথা কাউকে জানালে প্রাণে মারার হুমকিও দিতেন। ভয়ে ওই কিশোরী এত দিন কাউকে কিছু বলেনি। সম্প্রতি মেয়ের কাছে শিক্ষকের ওই ‘কীর্তি’র কথা জানতে পারেন তার মা। এর পরেই পরিবারের তরফে নিউ জলপাইগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই বিধায়কচন্দ্র দাস নামের ওই গৃহশিক্ষক সপরিবার পলাতক। বিধায়কচন্দ্র এলাকার পরিচিত সিপিএম নেতা। গত পুর নির্বাচনে তিনি দলের হয়ে ভোটেও লড়েছিলেন।

শিলিগুড়ি পুরসভার মিলনপল্লি এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরী ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ত। কিশোরীকে ‘মা’ সম্বোধন করতেন বিধায়কচন্দ্র। বছর তেরোর ওই ছাত্রীকে দিনের পর দিন যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে অশোকনগরের বাসিন্দা বিধায়কচন্দ্রের বিরুদ্ধে। ওই ছাত্রীর পরিবারের দাবি, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই মেয়ে ওই ব্যক্তির কাছে অঙ্ক শিখতে যেত। ‘মা’ বলে ডাকার পরেও বিধায়কচন্দ্র যে এমন ঘটনা ঘটাতে পারেন, তা ভেবে আশ্চর্য হচ্ছেন কিশোরীর বাবা-মা। তাঁদের দাবি, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে যৌন হেনস্থার ঘটনা ঘটছে। তার মা বলেন, ‘‘ইদানীং মেয়ে পড়তে যেতে চাইত না। নানা রকম অজুহাত দিত। আমরা জোর করেই ওকে পড়তে পাঠাতাম।’’ গত সপ্তাহের একটি দিনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে কিছুতেই যেতে চাইছিল না। আমি বকাঝকা করতেই ও কেঁদে ফেলে। তার সব সব ঘটনা আমায় জানায়।’’ যৌন হেনস্থার কথা যাতে বাইরে না আসে, তার জন্য মেয়েকে হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বুধবার নিউ জলপাইগুড়়ি থানায় বিধায়কচন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়।

পুলিশকে কিশোরীর পরিবার জানায়, মেয়ের কাছ থেকে সব জানার পর তাঁরা অভিযুক্তের বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিশোরীর বাবা-মায়ের দাবি, প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে চাপে পড়ে সব স্বীকার করে নেন অভিযুক্ত বিধায়কচন্দ্র। গৃহশিক্ষকের স্বীকারোক্তির প্রমাণ হিসাবে গোটা কথোপকথনের রেকর্ডিং তাঁদের মোবাইলে রয়েছে বলে দাবি করেন নির্যাতিতার মা। তাঁদের এ-ও দাবি, ঘটনা জানাজানি হলে মেয়ের বদনাম হতে পারে, এই ভয় দেখিয়ে ক্ষতিপূরণ দিয়ে নিজেদের মধ্যে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিধায়কচন্দ্র। তবে কিশোরীর বাবা-মা সে প্রস্তাব মেনে নেননি। তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হন।

এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই স্থানীয়দের একাংশ ওই শিক্ষকের বাড়িতে গিয়ে ভাঙচুর চালান। পরে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। অভিযুক্ত পলাতক। তাঁর খোঁজ চলছে।

অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক এলাকায় সিপিএম কর্মী হিসাবেই পরিচিত। গত পুর নির্বাচনে শিলিগুড়ি পুরসভার ৩২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে সিপিএমের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘যাঁরা সমাজ গড়ার কারিগর, তাঁরাই যদি এমন ঘটনা ঘটান, তা হলে মানুষ কাকে ভরসা করবে? টাকার প্রলোভন দেখিয়ে গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন উনি। আজ আমার মেয়ের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে, কাল অন্য মেয়ের সঙ্গেও ঘটতে পারে। প্রশাসনের কাছে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

sexual harassment Siliguri Girl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE