ভূমিধসে বিধ্বস্ত কেরলের ওয়েনাড়ে বছরখানেক আগেও কাজ করেছেন তিনি। পরে, কোচবিহারের মরিচবাড়ি এলাকার বাসিন্দা হাফিজুল হকের কর্মস্থল বদলে যায় ত্রিশূরে। কাজের জায়গা বদলের জেরে বড় বিপদের হাত থেকে বেঁচেছেন তিনি। তবে সে স্বস্তির মধ্যেও টানা বৃষ্টিতে বন্যাকবলিত ত্রিশূরে চার দিন ধরে কার্যত ঘরবন্দি হাফিজুল। প্রবল বৃষ্টিতে দৈনিক হাজিরার কাজ বন্ধ থাকায় চিন্তায় কেরলের এর্নাকুলামে থাকা কোচবিহারের পরিযায়ী শ্রমিক সাহেব হকও।
বৃহস্পতিবার মোবাইলে ত্রিশূর থেকে হাফিজুল বলেন, “বছরখানেক আগেও ওয়েনাড়ে কাজ করতাম। রাস্তায় মার্কিং, বোর্ড লাগানোর কাজের জন্য দৈনিক হাজিরার ভিত্তিতে ৮০০ টাকা মজুরি মেলে। ত্রিশূরে আসার পরে, এত দিন ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু এখন টানা প্রায় চার দিন বৃষ্টির জেরে কাজ বন্ধ। অনেক রাস্তায় জল। মিলছে না হাজিরাও।” ওই প্রসঙ্গেই তাঁর সংযোজন, “কাজের জায়গা বদল হওয়ায় বড় বিপদের আশঙ্কা এড়িয়েছি। সেটাই স্বস্তির।” তবে ত্রিশূরে তিনি যে বাড়িতে ছিলেন, বন্যা পরিস্থিতির জন্য সেখান থেকে তাঁকে সংস্থার অফিসে আশ্রয় নিতে হয়েছে।
কেরলের এর্নাকুলামে থাকেন মরিচবাড়ি গ্রামের সাহেব হক। ফোনে তিনি বলেন, “ত্রিশূরের মতো বন্যা পরিস্থিতি এখানে নেই ঠিকই, তবে বৃষ্টির জন্য কাজ করা যাচ্ছে না। দৈনিক হাজিরা পাচ্ছি না। হাতে নগদও ফুরনোর পথে। চিন্তা তো হচ্ছেই।” একই ভাবে কোচবিহারের ডুডুমারির বিপুল রায় বলেন, “আমি কোল্লাম জেলায় রয়েছি। এখানকার অবস্থা তুলনামূলক ভাবে ভাল। তবে পরিচিতদের অনেকের কথা ভেবে উদ্বেগ হচ্ছে।” উদ্বেগে রয়েছেন কেরলে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকদের কোচবিহারের বাড়ির আত্মীয়, পরিজনরাও। হাফিজুলের দাদা আমির হোসেন বলেন, “কেরলের বন্যা, ভূমিধসের খবর জানার পর থেকেই চিন্তা বেড়েছে। রোজ মোবাইলে কথা বলছি। ভাইকে বাড়িতে ফিরতেও বলেছি।”
এমন অবস্থায় পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে ফের শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “জেলায় কাজের ব্যবস্থা থাকলে স্থানীয় যুবকদের ভিন্-রাজ্যে যেতে হত না। কেরল সরকার সাধ্য মতো ত্রাণ, উদ্ধার, নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করছে।” তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “দুর্যোগের সময় আমরা রাজনীতি করতে চাই না। বাম জমানায় কয়েকগুণ বেশি মানুষ ভিন্-রাজ্যে ছিলেন। ওঁদের মুখে এ সব কথা মানায় না। এখন পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ড হয়েছে। বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখি। জেলার এক জনেরও যাতে সমস্যা না হয়, রাজ্য সরকারের সে দিকে নজর রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy