—প্রতীকী চিত্র।
তাঁর যে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছে, দাবি তা জানেন না তিনি। বুধবার ফোনে তাঁর সঙ্গে যোগোযোগ করা হলে কাঁপা গলায় বলেন, “আমি ভাল নেই। আমার কী হয়েছে, বুঝতে পারছি না। আমার সঙ্গে কী হচ্ছে, সেটাও বুঝতে পারছি না। আমি কী বলছি, সেটাও জানি না।” পরিবারের তরফে ‘ভূতে ধরেছে’ বলে দাবি করায় মঙ্গলবার পরীক্ষা দেওয়া হয়নি আলিরপুরদুয়ারের ওই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। যে ঘটনা শুনে হতবাক হন জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা। অথচ, বুধবারও সেই পরিবারকে সচেতন করা কিংবা ওই ছাত্রীর চিকিৎসার জন্য প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না বলে অভিযোগ। যার ফলে, এ দিনও পরীক্ষা দেওয়া হল না ওই ছাত্রীর। বরং, অভিযোগ ‘ঝাড়ফুঁক’ করাতে এ দিন বিকেলে ওই ছাত্রীকে নিয়ে কোচবিহারের তুফানগঞ্জে আর এক ওঝার কাছে পৌঁছে যান শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। যে ঘটনায় নতুন করে উঠেছে প্রশ্ন।
যে স্কুলে ওই পরীক্ষার্থীর কেন্দ্র পড়েছে, সেই আলিপুরদুয়ার জংশন শ্যামাপ্রসাদ বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক খোকারাম রায় বলেন, “এ দিন ওই ছাত্রীর এডুকেশন বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। কিন্তু পরীক্ষা দিতে আসছেন না দেখে, ওঁর স্কুল অর্থাৎ নির্মলা গার্লস হাই স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই ছাত্রী পরীক্ষা দিতে আসেননি।” নির্মলা গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বিপিন হোড়ো বলেন, “কেন্দ্র থেকে খবর আসার পরে আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু বাড়ির লোকেদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে পারিনি।”
ছাত্রীর স্বামীর দাবি, মঙ্গলবার ওঝার কাছ থেকে ফেরার পরে রাত ১২টা পর্যন্ত স্ত্রী ভালই ছিলেন। তার পরে অবস্থা খারাপ হয়। তিনি বলেন, “আমার বোনকে যখন ভূতে ধরেছিল, তখন তুফানগঞ্জের এক ওঝা ওকে ঝাড়াঝাড়ি করে ঠিক করেন। তাই বিকেলে আমার স্ত্রীকে নিয়ে তুফানগঞ্জে এসেছি। সন্ধ্যার পরে, ওঝা ওকে ঝাড়ফুঁক করবে।” কিন্তু হাসপাতালে কেন চিকিৎসার জন্য তাঁকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না? ওই ছাত্রীর এক ননদের দাবি, “ওষুধ কিংবা সুঁচ (ইনজেকশন বা স্যালাইন) দিয়ে চিকিৎসা হতে পারে। কিন্তু ভূত তাড়ানো সম্ভব নয়।”
প্রশ্ন উঠেছে, প্রশাসনের তরফে কেন পরিবারটিকে সচেতন করতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? বিষয়টি নিয়ে আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক আর বিমলা এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক আসানুল করিম বলেন, “পরিবারটিকে কাউন্সেলিং করে ওই ছাত্রীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে অনুরোধ জানানো হয়েছে।” জেলা বিজ্ঞান মঞ্চের সম্পাদক শান্তনু দত্ত বলেন, “বিকেলে ফোন মারফত ওই ছাত্রীর স্বামীর সঙ্গে আমাদের সংগঠনের যোগাযোগ হয়েছে। কিন্তু ততক্ষণে ওঁরা তুফানগঞ্জে পৌঁছে গিয়েছেন।’’ তিনি জানান, আজ, বৃহস্পতিবার তাঁদের সংগঠনের সদস্যেরা ওই বাড়িতে যাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy