রায়গঞ্জ ও হেমতাবাদ থানা এলাকায় দুটি পৃথক ঘটনায় দুই হাইস্কুল পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার সকালে রায়গঞ্জ থানার শীতগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় শোওয়ার ঘর থেকে মোমিন আলি (১৮) নামে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অন্য দিকে, একই সময়ে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় হেমতাবাদ থানার দক্ষিণ হেমতাবাদ এলাকার বাসিন্দা নবম শ্রেণির এক অগ্নিদগ্ধ ছাত্রীর। মৃতার নাম আফসানা খাতুন (১৪)। এদিন রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে ওই দুই পড়ুয়ার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করেছে পুলিশ।
উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, ওই দুই পড়ুয়ার মৃত্যুর কারণ জানতে পুলিশ দু’টি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে তাও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের সন্দেহ, ওই দুই পড়ুয়াই মানসিক বা প্রেমঘটিত কোনও কারণে আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। পুলিশ মৃতদের পরিবারের লোকজন, সহপাঠী ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি তাঁদের মোবাইল ফোনের কললিস্টও খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করেছে। কেউ বা কারা তাঁদের আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছিলেন কি না, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশের দাবি। মৃতদের পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে এখনও পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের না হওয়ায় পুলিশ দুটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্তে নেমেছে।
প্রসঙ্গত, শীতগ্রাম হাইস্কুলের ছাত্র মোমিন ফইজুল হক মুম্বইতে দিনমজুরির কাজ করেন। তাঁর মা মীনা খাতুন গৃহবধূ। তাঁর এক দিদি ও এক বোন রয়েছে।
এ দিন সকালে মোমিনের ঘুম থেকে উঠতে দেরি হওয়ায় পরিবারের লোকজন ডাকাডাকি করেন। দীর্ঘ ক্ষণ তিনি সাড়া না দেওয়ায় শোওয়ার ঘরের দরজা ভেঙে ফেলেন তাঁরা। তখনই তাঁরা দেখতে পান ওই ঘরের টিনের চালার বাঁশের সিলিং থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় মোমিনের মৃতদেহ ঝুলছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে।
মোমিনের মামা সিকন্দর ওয়াকতের দাবি, সরস্বতী পুজোর দিন থেকে ভাগ্নে পরিবারের লোকেদের সঙ্গে বেশি কথা বলত না। সবসময় চুপচাপ ও মনমরা হয়ে থাকত। তিনি বলেন, ‘‘কেউ বা কারা কোনও কারণে ওর উপর চাপসৃষ্টি করে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে কি না, তা পুলিশকে তদন্ত করে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’’
হেমতাবাদ হাইস্কুলের ছাত্রী আফসানা খাতুনের বাবাও দিল্লিতে দিনমজুরির কাজ করেন। মা মমতা খাতুন গৃহবধূ। তাঁদের দুই ছেলে এক মেয়ের মধ্যে আফসানা বড়। শনিবার সন্ধ্যায় প্রাইভেট টিউশন থেকে বাড়ি ফিরে আসার পর বাড়িতেই অগ্নিদগ্ধ হয় সে। সেই সময় মমতাদেবী রান্নাঘরে রান্না করছিলেন। তাঁর দুই ছেলে বাড়িতে ছিল না। মমতাদেবী মেয়ের চিত্কার শুনে শোওয়ার ঘরে গিয়ে বিষয়টি দেখতে পান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এরপর প্রতিবেশীরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করলে সকালে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মৃতার দাদু মজিদুর রহমান বলেন, ‘‘কী কারণে নাতনি আত্মহত্যা করল তা আমরা কেউই বুঝতে পারছি না। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy