জুটি: ডুয়ার্সে সাউথ রায়ডাক বিটের সুমন ও নোনাই। নিজস্ব চিত্র
কাজের ফাঁকে দস্যিপনায় বিরাম নেই! এমনকি ‘ডিউটি’তে যাতায়াতের পথেও চোখের পলকে মাঝেমধ্যে দুষ্টুমি করে নিতে দেখা যায় ওদের। তাই বলে কাজের সময় এতটুকু ‘ফাঁকিবাজি’ পচ্ছন্দ নয় কারও। ‘বাধ্য কর্মীর’ মতো নিয়মকরে জঙ্গলে টহলদারির দায়িত্ব সামলায় সুমন-নোনাই জুটি। ডুয়ার্সের বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের সাউথ রায়ডাক বিটের বন দফতরের কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, দায়িত্ব পালনে ওদের পারফরম্যান্স প্রশংসনীয়। রোদ হোক বা বৃষ্টি, ঠান্ডা বা গরম কোনও অবস্থাতেই টহলদারিতে অনীহা নেই ওদের। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের (পূর্ব) অধিকর্তা হরিশ বলেন, “জঙ্গলে টহলদারিতে কুনকি হাতিরাই বড় ভরসা। সাউথ রায়ডাক বিটে দু’টি হাতি দারুণভাবে দায়িত্ব পালন করছে। কোনও সমস্যা নেই ওদের নিয়ে।”
সুমন ও নোনাই আসলে বন দফতরের দু’টি প্রশিক্ষিত পুরুষ হাতি। নোনাই আবার দাঁতাল। বিশালাকার চেহারা। সুমনও কম যায় না। তবে তুলনায় নোনাইয়ের চেয়ে চেহারায় খানিকটা ছোট। দক্ষিণ রায়ডাক বিটের জঙ্গলে নজরদারির জন্য বন দফতরের অন্যতম ভরসা ওই হস্তীযুগল। মাহুতের নির্দেশ মতো তারা প্রায় রোজই গভীর জঙ্গলে ঘুরে নজরদারি চালাচ্ছে। বাকি সময় বিট অফিস লাগোয়া চত্বরের পৃথক শেডে সময় কাটে সুমন, নোনাইয়ের। সেখানেই তাদের যতরকম দস্যিপনা চলে। টহলের কাজে চলার পথেও সুযোগ বুঝে কখনও পচ্ছন্দের গাছের ডাল ভেঙে নিচ্ছে, কখনও আবার গলা ভেজাতে জলেও নামছে।
তবে রায়ডাক বিটের এই ‘দুই সহকর্মী’র দস্যিপনার ধরন খানিকটা আলাদা। অন্তত বিটের শেডে থাকার সময় ওই ফারাক দেখা যায় বলে জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশও। তাঁদের কথায়, নোনাইয়ের ধুলোবালি উড়িয়েই যেন সবচেয়ে বেশি আনন্দ। কখনও সে মজে থাকছে শুঁড় উঁচিয়ে বালি ওড়াতে, কখনও আবার নিজের গায়ে বালি মাখাতে। মাঝেমধ্যে শেডের খুঁটিতে শরীর ঘষে নিতেও ব্যস্ত থাকে নোনাই।
সুমন আবার ধুলোবালি মাখা ততটা পছন্দ করে না। ঘুরে ঘুরে নজরদারিতেই বেশি সময় দেয়। বনকর্মীদের কাউকে লাগোয়া রাস্তায় যেতে দেখলেও মুখ ঘুরিয়ে দেখতে থাকে। তবে মাহুত, পাতাওয়ালাদের কথায় দারুণ বাধ্য দু’জনেই। চলার পথে মাহুতের কথা মেনেই এগোন বা থমকে যাওয়ায় অভ্যস্ত সে। খাবারের সময় পাতাওয়ালার কথায় সাড়া দেয় কোনও সমস্যা ছাড়াই। এক বনকর্মী জানান, রোজই ওরা ডিউটি করে। সকালবেলা একসঙ্গে দু’টিতে জঙ্গল চষে বেড়াতে বের হয়। বিকেলে নদীতে স্নান সেরে ডেরায় ফেরে। ওদের ভাল রাখতে খামতি রাখা হয় না। পর্যটকদের কয়েকজন জানান, রায়ডাক বেড়াতে এসে হাতি দু’টির খুনসুটি দেখাটাও বড়প্রাপ্তি। কাঠ মাফিয়াদের একটি চক্র রায়ডাকে একসময় খুব সক্রিয় বলে অভিযোগ ছিল। বন দফতর সূত্রের দাবি, এখন সেরকম অভিযোগ নেই। সর্বত্রই কড়া নজরদারি রয়েছে সুমন আর নোনাইয়ের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy