আদরে: শাবকদের একটি। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
শুঁড়ে কলা পেঁচিয়ে মুখের সামনে এনেও হঠাৎ ছুঁড়ে ফেলে। কখনও আশেপাশে দাঁড়ানো বনকর্মীদের দিকে ছুটে ছুটে যায়। গাড়ি থেকে নামার পরে একদন্ডও স্থির হয়ে দাঁড়ায়নি সে। ছটফটে এই হস্তিশাবকটিকে কোনও রকমে জোর করেই ঢোকানো হয়েছে কোয়রান্টিনে। মানুষের জন্য তৈরি স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়ম মানতে হচ্ছে বুনোদেরও। বৃহস্পতিবার দুপুরে বেঙ্গল সাফারি থেকে গরুমারার পিলখানায় এসেছে শাবকটি। পিকআপ ভ্যানে সারা রাস্তা দড়ির বাঁধনে গাড়িতে রাখা হয়েছিল। দড়ি খুলে নামানো মাত্রই জঙ্গলের মাঝে সবুজ মাঠে লাফাতে শুরু করেছিল শাবকটি। কলা দেখিয়ে, কলাপাতা সামনে ধরে কোনও মতে শান্ত করে সেটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কোয়রান্টিনে। নির্দেশ এসেছে, গরুমারার পিলখানায় থাকা অন্য বড় হাতিদের সঙ্গে তার আপাতত কোনও মেলামেশা চলবে না। গরুমারার পিলখানাতে আছে আর এক দস্যি হাতি। তার বয়স আড়াই মাস মতো। সেও আপাতত কোয়রান্টিনে। পাশাপাশি দুটি নতুন শেডে রাখা হয়েছে দুই শাবককে।
বুনোদের করোনা সংক্রমণ হচ্ছে কিনা তার নির্দিষ্ট কোনও প্রামাণ্য তথ্য বন দফতরের কাছে নেই। তবে আমেরিকার একটি চিড়িয়াখানায় এক বাঘিনীর করোনা সংক্রমণ হয়েছিল বলে শোনা গিয়েছে। ইউরোপের কোনও এক দেশে বেড়ালের সংক্রমণের কথাও ছড়িয়েছিল। তাই সাবধান থাকতেই সদ্য গরুমারার পিলখানায় আসা দুই হস্তিশাবককে রাখা হয়েছে কোয়রান্টিনে। প্রাণী চিকিৎসকের নির্দেশ, শাবকদুটিকে তিন সপ্তাহের জন্য কোয়রান্টিনে রাখতে হবে। জলপাইগুড়ির বণ্যপ্রাণী বিভাগের ডিএফও নিশা গোস্বামী বলেন, “দুটোই একেবারে বাচ্চা। তাই খুবই স্পর্শকাতর ভাবে রাখা হচ্ছে। আপাতত তিন সপ্তাহ নিভৃতবাসে থাকুক।”
বৃহস্পতিবার বেঙ্গল সাফারি থেকে আসা ছোট্ট হাতিটি জুনে নকশালবাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল। গরুমারার পিলখানায় থাকা অন্য শাবকটি শিলিগুড়ির ব্যাঙডুবি থেকে উদ্ধার হয়ে আসা। হাতির শাবকরা সাধারণত চার বছর পর্যন্ত মায়ের দুধ খায়। গরুমারায় কোয়রান্টিনে থাকা দুই শাবকই মা-হারা। দলছুট হয়ে একটি নালায় আটকে পড়েছিল, অন্যটি চা বাগানে। মা হারা শাবক গরুমারায় এলে সাধারণত পিলখানার হাতি শীলাবতিকে পালক মায়ের দায়িত্ব দেয় বন দফতর। কোয়রান্টিনে থাকার সময় তো শীলাবতিকেও কাছে যেতে দেওয়া হবে না। তাই আড়াই মাসের শাবকটিকে কৌটোর দুধ দেওয়া হচ্ছে। গতকাল এসে পৌঁছনো শাবকটি তুলনায় বড়, তাকে কৌটোর দুধের সঙ্গে ঘাস দেওয়া হচ্ছে। গরুমারার প্রাণী চিকিৎসক রতন বসু বলেন, “দুই শাবককেই সর্বক্ষণ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। কোয়রান্টিনের সময় পার হলে পিলখানার অন্য কুনকি হাতিদের সঙ্গে ওদের মিশতে দেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy