চোখের সামনেই পুড়ছে ঘর । ছবি: সন্দীপ পাল।
জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ যে এত দূর গড়াবে, তা ভাবতেও পারেনি গড়ালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সুবচনি পাড়ার বাসিন্দারা। গ্রামের ১৮ বিঘা জমির ধান কাটা নিয়ে মারপিট শুরু হয় বৃহস্পতিবারেই। সংঘর্ষে জখম হন দু’পক্ষের মোট ১০ জন। তাঁদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয় এ দিন সকালে। তার পরেই সেই পক্ষের রোষে আগুন জ্বলে বিরুদ্ধ পক্ষের বাড়িতে। ভাঙচুরও হয়। জখম হন আরও কয়েক জন। পাঁচটি বাড়ি পুড়ে গিয়েছে। দু’টি বাড়িতে ভাঙচুর হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানা থেকে গ্রামে পুলিশ পিকেট বসে। ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়
তৃণমূল অভিযোগ করে, বিরোধী দলের নেতাদের ইন্ধনে এই ঘটনা। যদিও বিরোধীদের পাল্টা অভিযোগ, জমি নিয়ে এই দ্বন্দ্বে শাসক দলের নেতারাই যুক্ত। পুলিশ জানায়, সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এই জমি বিবাদে এক দিকে সহিদুল ইসলামের পরিবার। উল্টো দিকে মজমুদ্দিন ইসলামের পরিবার। সহিদুলদের দাবি, তাঁরা ৬০ বছর ধরে চাষাবাদ করে আসছেন। হঠাৎ করে সেই জমির মালিকানা দাবি করে মজমুদ্দিন ইসলামের পরিবার। স্থানীয়দের দাবিক এই নিয়ে বচসা এবং তার পরে তির-ধনুক ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে মারামারি হয় দু’পক্ষে। জখম হন দশ জন। সকলের চিকিৎসা চলছে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। কিন্তু মজমুদ্দিনের জখম গুরুতর হওয়ায় শিলিগুড়ির এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে শুক্রবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর।
স্থানীয়দের দাবি, এর পরেই মৃতের পরিজন ও একাংশ গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তদের বাড়ি ভাঙচুর করে, বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। একাধিক খড়ের গাদায় আগুন দেওয়া হয়। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, দমকলের গাড়িও আটকে দেয় ক্ষিপ্ত জনতা। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ চন্দ ঢালি, ডিএসপি (সদর) সমীর পাল, আইসি অর্ঘ্য সরকার-সহ র্যাফ ও বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। তাঁদের চেষ্টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু ততক্ষণে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে পাঁচটি ঘর। ঘরছাড়াও হয়েছেন অনেকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। যদিও পুলিশ তা
অস্বীকার করে।
মৃতের ছেলে তাইজুল আলি বলেন, ‘‘আমাদের জমি যাঁরা দখল করেছেন, তাঁরাই আমার বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করলেন।’’ জমির মালিকানা দাবি করে আতাউর রহমান বলেন, ‘‘প্রচুর লোক ঘর-বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। মেয়ের বিয়ে সামনে। সব কিছু পুড়ে গেল।’’ তৃণমূল নেতা তথা স্থানীয় উপপ্রধান শাহজাহান আলমের বিরুদ্ধে জমি সমস্যা মেটানোর জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেন শাহজাহান। তিনি বলেন, ‘‘বিরোধীরা ইন্ধন দিয়েছে। দলকে জানিয়েছি।’’ সিপিএম জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পীযূষ মিশ্র বলেন, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এখানে সিপিএমের বিষয় নেই।’’ ডিএসপি (সদর) সমীর পাল, ‘‘দশ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কয়েক জন অভিযুক্ত পলাতক। খোঁজ চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy