হিলি সীমান্তে অর্পিতা ঘোষের কর্মিসভায় গোষ্ঠী সংঘর্ষ। ছবি: অমিত মোহান্ত।
কর্মিসভার আগে দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে রবিবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল হিলির বাসস্ট্যান্ড এলাকা। তৃণমূলের বালুরঘাট কেন্দ্রের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের কর্মিসভার অদূরে প্রকাশ্যে মারপিট করলেন তৃণমূল সমর্থকরা। বাঁশের ঘায়ে মাথা ফাটল দুই তৃণমূল কর্মীর। পুলিশ এবং দলের জেলা নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। রমানাথ হাইস্কুলে কর্মিসভা অবশ্য শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হয়েছে। সভায় অর্পিতাও উপস্থিত ছিলেন।
এই ঘটনায় স্পষ্টই অস্বস্তিতে পড়েন জেলা নেতৃত্ব। সভার পর অর্পিতা বলেন, “সভা থেকে অনেক দূরে সামান্য গন্ডগোল হয়েছে বলে শুনেছি। এমন কিছু নয়।” এলাকার তৃণমূল বিধায়ক তথা পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, “আমি সভার মধ্যে ছিলাম। বাইরে কী হয়েছে জানা নেই। দলে গোষ্ঠী বিবাদ নেই।” আর তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কোনও জায়গা নেই। প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” তবে দলের একাংশ জানিয়েছে, দক্ষিণ জেলার এই দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যেই সংঘর্ষ বাধে এ দিন।
জখম তৃণমূল কর্মী বাচ্চু চৌহান।
তৃণমূল সূত্রের খবর, শেষ মুহূর্তে কর্মিসভার স্থান বদলের জেরেই এই গণ্ডগোল। এদিন হিলির বিডিও অফিস চত্বরে কমিউনিটি হলে ওই কর্মিসভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশে তা বাতিল করা হয়। প্রায় দু’ কিলোমিটার দূরে হিলি বাসস্ট্যান্ডের পাশে রমানাথ হাইস্কুলে সভা নিয়ে যাওয়া হয়। সেই খবর অনেক কর্মী-সমর্থক জানতেন না। ফলে ত্রিমোহিনী-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে তৃণমূল কর্মীরা বিডিও অফিসের সামনে জড়ো হন। স্থান বদলেছে জেনে সেখান থেকে মিছিল করে তাঁরা রমানাথ হাইস্কুলে যান।
এই মিছিলে কিছু কর্মী বাইক নিয়ে যেতে চাইলে ব্লক নেতারা বিধিভঙ্গের সম্ভাবনার কথা বলে তাঁদের আটকান। এ নিয়ে পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর স্কুলে পৌঁছলে ফের সমস্যা হয়। কারণ সভা তত ক্ষণে পূর্ণ। সেখানে ঢুকতে গেলে তৃণমূল সমর্থকদের একাংশ তাঁদের বাধা দেয়। স্কুলের সিঁড়িতেই শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, হাতাহাতি। সেখান থেকে সংঘাত নেমে আসে সামনের রাস্তায়। বাঁশ দিয়ে মারপিট শুরু হয়। মিনিট পাঁচেকের সংঘর্ষে দু’জনের মাথা ফাটে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের হিলি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিত্সার পর তাঁরা ছাড়া পান। কোনও পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। পুলিশ কারওকে গ্রেফতার করেনি।
এর আগেও কর্মিসভাকে ঘিরে অস্বস্তির মধ্যে পড়তে হয়েছিল অর্পিতাদেবীকে। এলাকার বাসিন্দা না হওয়ায় একাধিক কর্মিসভা ও ঘরোয়া বৈঠকে তাঁর দলেরই সক্রিয় কর্মীদের একাংশ তাঁর কাছে সরাসরি জানতে চেয়েছিলেন, নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি এলাকায় থাকবেন তো?
অর্পিতা এ দিন বলেন, রাজনীতিতে ‘বহিরাগত’ বা ‘ভূমিপুত্র’ বলে কিছু হয় না। “যাঁরা নিজেদের ভূমিপুত্র বলে দাবি করেন, বাম আমলে তাঁরা এলাকার জন্য কী করেছেন?” প্রশ্ন করেন অর্পিতা। এ দিনের সংঘর্ষের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি তিনি। “বিষয়টি বিপ্লবদা (মিত্র) দেখছেন,” বলে এড়িয়ে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy