Advertisement
২৯ নভেম্বর ২০২৪
আলিপুরদুয়ার

ফ্রন্ট ‘ভাঙতে’ উদ্যোগ, অভিযুক্ত পুলিশ কর্তা

পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল বার বারই। এ বার বামফ্রন্টের এক সদস্যকে জোর করে শাসক দলে যোগ দিতে বলার অভিযোগ উঠল এক পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে। দিন কয়েক আগে, আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের ওই বাম সদস্যকে রীতিমতো নিজের দফতরে তলব করে ওই পুলিশ কর্তার সরাসরি ‘অনুরোধ’ ছিল, তৃণমূলে যোগ দিয়ে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হয়ে যাওয়ার। এমনই অভিযোগ করেছেন সমরেন্দ্র তিরকি নামে আরএসপি-র ওই নেতা।

রাজু সাহা
শামুকতলা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৫০
Share: Save:

পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল বার বারই।

এ বার বামফ্রন্টের এক সদস্যকে জোর করে শাসক দলে যোগ দিতে বলার অভিযোগ উঠল এক পুলিশ কর্তার বিরুদ্ধে।

দিন কয়েক আগে, আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের ওই বাম সদস্যকে রীতিমতো নিজের দফতরে তলব করে ওই পুলিশ কর্তার সরাসরি ‘অনুরোধ’ ছিল, তৃণমূলে যোগ দিয়ে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হয়ে যাওয়ার। এমনই অভিযোগ করেছেন সমরেন্দ্র তিরকি নামে আরএসপি-র ওই নেতা।

অভিযুক্ত শাসক দলের নেতা-কর্মী, নিদেন পক্ষে ঘনিষ্ঠ হলেই পুলিশি ‘নিষ্ক্রিয়তা’ নিয়ে বার বারই অভিযোগ করে আসছেন বিরোধীরা। এ ব্যাপারে আদালতের কাছে রীতিমতো ধমক খেতে হয়েছে খোদ রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলকেও। তবে, নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও বিরোধী শিবির ভাঙানোর চেষ্টায় পুলিশের ‘অতিসক্রিয়’ হওয়ার নজির এ যাবৎ নেই। পদমর্যাদায় রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর ওই ডিআইজি-র ‘উদ্যোগ’ সেই তালিকায় নয়া সংযোজন।

এ ব্যাপারে আরএসপি-র কুমারগ্রাম জোনাল কমিটির সম্পাদক দীপক দাসের অভিযোগ, “ডিআইজি পদমর্যাদার ওই পুলিশ কর্তা যে ভাবে দল ভাঙানোয় মদত দিতে নেমেছেন তাতে পুলিশকে শাসক দলের পতাকা নিয়ে হাঁটতে দেখলেও অবাক হব না।” এ ব্যাপারে কুমারগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে আরএসপি। বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে পুলিশের এই ‘দল ভাঙানোয় মদত’ দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে রাজ্যপালের ‘হস্তক্ষেপ’ও দাবি করা হয়েছে। কুমারগ্রামনের বাসিন্দা আরএসপি-র ওই সদস্যের নাম সমরেন্দ্র তিরকি। তাঁর অভিযোগ, গত মঙ্গল বার কুমারগ্রাম থানার আইসি তাঁকে ডেকে পাঠান। তাঁকে নিয়ে যাওয়ার জন্য থানা থেকে গাড়িও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে সে গাড়িতে অবশ্য ওঠেননি তিনি। আরএসপি নেতা বলেন, “আমি পুলিশের গাড়িতে উঠব না বলতে তড়িঘড়ি অন্য একটি গাড়ির ব্যবস্থা করে পুলিশ। বাধ্য হয়ে সেই গাড়িতেই থানায় যাই।” সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেন ওই ডিআইজি। সমরেন্দ্রবাবু বলেন, “আমি ওই পুলিশ কর্তাকে চিনতাম না। উনি নিজেই পরিচয় দিলেন রাজ্য সশস্ত্র পুলিসের ডিআইজি বলে। ঘর থেকে থানার আইসি বেরিয়ে যেতেই উনি সরাসরি আমাকে প্রস্তাব দিলেন, ‘আপনি তৃণমূলে যোগ দিয়ে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হয়ে যান না!” কলকাতায় নিয়ে গিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় এক নেতার সঙ্গে কথা বলিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবও দেন তিনি। এ কথা শোনার পরেই ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন সমরেন্দ্রবাবু।

কিন্তু আচমা তাঁকে দল বদলের প্রস্তাব দেওয়া হল কেন?

নতুন জেলা ঘোষণার পরে আলপুরদুয়ার জেলা পরিষদে এখন ১৮টি আসন। যার ১৩টিই রয়েছে বামফ্রন্টের দখলে। কংগ্রেসের ৩ টি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার একটি ও তৃণমূল একটি আসন ছিল। পরে কংগ্রেসের ৩ জন ও বামফ্রন্টের ৪ সদস্য তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় তাদের শক্তি বেড়ে দাঁড়ায় ৮। আসন সংখ্যার নিরিখে আরও ২ জন জোগাড় হলেই তৃণমূল ওই জেলা পরিষদ দখল করতে পারবে। সিপিএমের কুমারগ্রাম জোনাল সম্পাদক বীরেন বর্মনের অভিযোগ, “ওই ২ জনকে টানতে পুলিশ কর্তাকে আসরে নামিয়েছে তৃণমূল।” আরএসপি-র আলিপুরদুয়ার জেলা সম্পাদক সুনীল বণিক বলেন, “কী নোংরা রাজনীতিই না করছে তৃণমূল। তবে, এ ভাবে প্রলোভন দেখিয়ে দল ভাঙার চেষ্টা সফল হবে না।” কুমারগ্রাম থানার আইসি সোনমজি ওয়াংদি অবশ্য বলেন, “অভিযোগকারী কবে ডিআইজির সঙ্গে কোথায় দেখা করেছেন তা বলতে পারব না।” আর চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি ওই ডিআইজি-র সঙ্গে। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “আমার ঊর্ধ্বতন কোনও অফিসারের ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।” তবে, আইজি (উত্তরবঙ্গ) জাভেজ শামিম বলেন, “এসপি আমাকে কিছু জানাননি। ঘটনাটির ব্যাপারে খোঁজ না নিয়ে বলতে পারব না।”

অন্য বিষয়গুলি:

raju saha siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy