কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াতে স্বজনপোষণের অভিযোগে কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের দাবি তুলল জেলা বামফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের ঘরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখান একদল যুবক। সে সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মীকে মারধরও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করেছেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও বেনিয়ম হয়নি।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষাকর্মীর পদে মোট ১০ জনকে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তার জন্য ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা দিয়েছেন শতাধিক প্রার্থী। বুধবার সেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। সেখানে দেখা যায়, চাকরিপ্রার্থীদের মাত্র ৫ জন চল্লিশের কোঠায় নম্বর পেয়েছেন। বাকিদের মধ্যে মাত্র এক জন তিরিশের কোঠায় নম্বর পেয়েছেন, বাকিদের নম্বর পঁচিশেরও কম। চল্লিশের উপরে নম্বর পেয়েছেন যে ৫ জন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের মেয়েও। আর এক জন রবীন্দ্রনাথবাবুর ভাইঝি। বাকি ৩ জনও রবীন্দ্রনাথবাবুর একান্ত ঘনিষ্ঠ বলে জেলা তৃণমূলের প্রায় সকলেই মানছেন। তাই পরীক্ষায় কারচুপি করে স্বজনপোষণ করা হচ্ছে বলে রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি তুলেছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের দিনহাটার বিধায়ক তথা কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ। সিপিএম নেতা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যও ঘটনাটিকে বড় মাপের কেলেঙ্কারি বলে অভিযোগ এনে তদন্তের দাবি তুলেছেন। বিজেপি-র কোচবিহার জেলা কমিটিও পরীক্ষায় কারচুপির অভিযোগের তদন্ত না হলে লাগাতার আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে।
রবীন্দ্রনাথবাবুর বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও কাউকে নিয়োগ করাই হয়নি। নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে মাত্র। তিনি জানান, কেবল লিখিত পরীক্ষার ফল বেরিয়েছে। এর পর কম্পিউটার টেস্ট, মৌখিক পরীক্ষা আছে। এ ছাড়া, কারও কোনও সন্দেহ থাকলে, তথ্য জানার অধিকারে খাতা দেখারও সুযোগ রয়েছে। তাঁর দাবি, “সেখানে এরকম অভিযোগের কোনও মানে নেই। আমি আইনের দ্বারস্থ হব।” উপাচার্য ইন্দ্রজিত্ রায়ের কথায়, “স্বজনপোষণের অভিযোগ ঠিক নয়। যাঁরা ভাল পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁরা ভাল নম্বর পেয়েছেন।” তিনিও বলেন, কারও কোনও সন্দেহ থাকলে তথ্য জানার অধিকারে তিনি খাতা দেখতে পারেন। তবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
উদয়নবাবুর অবশ্য দাবি, মৌখিক ও কম্পিউটার পরীক্ষায় মোট নম্বর এমন কিছু বেশি নয়। তাই অন্য প্রার্থীরা সেই পরীক্ষায় খুব ভাল ভল করলেও এই পাঁচ জনকে টপকাতে পারবেন না। যে কারণে এই পাঁচ জনের নিয়োগ একরকম নিশ্চিতই হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, “লিখিত পরীক্ষায় রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ ওই পাঁচ জনকে এতটাই এগিয়ে রাখা হয়েছে যে, অন্যরা আর তাঁদের ছুঁতে পারবেন না। তাই স্বজনপোষণ করেই যে নিয়োগ করা হচ্ছে, তা নিশ্চিত।” তাঁর দাবি, এই নিয়োগ নিয়ে গোড়া থেকেই কারচুপি করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy