আগামী মাস থেকে জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রে ফের নিলাম শুরু করতে উদ্যোগ নিলেও, সঙ্কট কাটবে কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। কতজন ক্রেতা-বিক্রেতা এবং কত পরিমাণ চা আসবে সংশয় কাটছে না কিছুতেই। সংস্থাকে বাঁচাতে বিশেষ কিছু ছাড়ের জন্য ফের রাজ্য সরকার এবং চা পর্ষদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
নিলাম কেন্দ্রের ভাইস চেয়ারম্যান পুরজিত বক্সিগুপ্ত বলেন, “সংস্থার প্রাণ ফেরাতে সবদিক থেকে চেষ্টা চলছে। ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসা হবে। চা পর্ষদের উদ্যোগে এপ্রিল মাসে শিলিগুড়িতে ওই সভা হবে।” সংস্থার সচিব নিরঞ্জনকুমার বসু বলেন, “বিক্রয় কর সহ কিছু ছাড়ের সুবিধার জন্য গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চা পর্ষদের কাছে আবেদন রাখা হয়েছে যেন বটলিফ কারখানার চা নিলামের জন্য জলপাইগুড়িতে পাঠানো হয়। কিছু বাড়তি সুযোগ সুবিধা ছাড়া সংস্থাটিকে চাঙ্গা করা সম্ভব নয়।”
তিস্তা উদ্যান সংলগ্ন জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রটির অস্তিত্ব সঙ্কট আজকের নয়। ২০০৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটি চালু হওয়ার পর থেকে সমস্যা পিছু ছাড়ছে না। শুরুতে ৩৫ দিন নিলাম হলেও ২০০৮-২০০৯ সালে সেটা নেমে দাঁড়ায় ৮টিতে। ২০০৭-২০০৮ সালে নিলামে ওঠে ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৪৯৬ কেজি চা, বিক্রি হয় ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৪৭৭ কেজি। ২০০৮-২০০৯ সালে চায়ের জোগান কমে হয় ৪৫ হাজার ৪৬৮ কেজি, বিক্রি হয় ৩০ হাজার ৯৫৪ কেজি। ওই পরিস্থিতিতে নিলাম কেন্দ্র বন্ধ রাখতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষয় অনেক আন্দোলনের পরে ২০১২ সালে ফের চালু হলেও দুর্যোগ কাটেনি। ২০১৩-২০১৪ সালে ২৩ দিনের নিলামে ৭ লক্ষ ১২ হাজার ৭৯৩ কেজি চা ওঠে। বিক্রি হয় ৩ লক্ষ ৯৬ হাজার ৪৮ কেজি চা। পরের বছর মাত্র ১৫ দিন নিলাম চলে। চায়ের পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ২ লক্ষ ১৫ হাজার ২১৯ কেজি। বিক্রি হয় ১ লক্ষ ১১৯ কেজি। নিলাম কেন্দ্রের সচিব জানান, “প্রত্যেকের কাছে চা পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেও লাভ হয়নি, ওই কারণে আগামী মরসুমে কী হবে দুশ্চিন্তা থেকে যায়”
কেন ওই পরিস্থিতি? চা উত্পাদক সংস্থার কর্তারা অভিযোগ করে জানান, প্রতিষ্ঠানটিকে সচল করার জন্য যে সুবিধা রাখা জরুরি ছিল সেটা এখানে নেই। ১৯৭৬ সালে শিলিগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্র চালু করার জন্য ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য বিশেষ কিছু কর ছাড়ের সুযোগ ছিল জলপাইগুড়ির ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। জলপাইগুড়ি ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “প্রতিষ্ঠানটিকে দাঁড় করানোর জন্য বিক্রয় কর ছাড়ের সুযোগ রাখা জরুরি। ক্রেতাদের বেশিরভাগ শিলিগুড়ির ওই সুযোগ ছাড়া কেন ওঁরা এখানে আসবেন।” জলপাইগুড়ি জেলায় ৬৫টি বটলিফ কারখানায় বছরে গড়ে ৪৫ মিলিয়ন কেজি চা উত্পাদন হয়। উত্পাদিত চায়ের অর্ধেক নিলাম কেন্দ্রে পৌঁছলে সমস্যা থাকে না। কিন্তু কিছু বিশেষ আর্থিক সুবিধা না থাকায় সেটা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy