Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

গরু পাচারে পুলিশি মদতের অভিযোগ ঘিরে খণ্ডযুদ্ধ

পুলিশ ও জনতার খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের টাপুরহাট এলাকা। বুধবার রাত থেকে দু’পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার টাপুরহাট পুলিশ ক্যাম্পে ঢুকে পড়ে কয়েক’শো স্থানীয় বাসিন্দা। পুলিশের একটি গাড়ি ভেঙে পাশের মানসাই নদীতে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়। আর একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ লাঠি চালানোর পাশাপাশি গুলিও ছুড়েছে। গুলিবিদ্ধ কৃষ্ণ মোদক নামে এলাকার এক যুবক। তবে কৃষ্ণবাবু তাদের ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছেন কি না, তা তদন্তসাপেক্ষ বলে দাবি করেছে পুলিশ।

হাসপাতালে আহত কৃষ্ণ মোদক। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

হাসপাতালে আহত কৃষ্ণ মোদক। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৪:৩৪
Share: Save:

পুলিশ ও জনতার খণ্ডযুদ্ধে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের টাপুরহাট এলাকা। বুধবার রাত থেকে দু’পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। বৃহস্পতিবার টাপুরহাট পুলিশ ক্যাম্পে ঢুকে পড়ে কয়েক’শো স্থানীয় বাসিন্দা। পুলিশের একটি গাড়ি ভেঙে পাশের মানসাই নদীতে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়। আর একটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ লাঠি চালানোর পাশাপাশি গুলিও ছুড়েছে। গুলিবিদ্ধ কৃষ্ণ মোদক নামে এলাকার এক যুবক। তবে কৃষ্ণবাবু তাদের ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছেন কি না, তা তদন্তসাপেক্ষ বলে দাবি করেছে পুলিশ। উত্তেজিত জনতার ইট-পাথরের ঘায়ে জখম হয়েছেন ১১ জন পুলিশকর্মীও। পুলিশের লাঠিতে আহত ৫ স্থানীয় বাসিন্দা।

ঘটনার সূত্রপাত বুধবার। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশের মদতে এলাকায় গরু পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। পাচারকারীদের একটি ট্রাককে পুলিশ নিরাপদে এলাকা পার করে দিচ্ছিল বলে অভিযোগ। তারই প্রতিবাদ করায় পুলিশ দুই যুবককে আটক করে বলে দাবি। পুলিশের পাল্টা দাবি, বুধবার টাপুরহাট মোড় থেকে গোসানিমারি যাওয়ার রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে গাড়ি দাঁড় করিয়ে চাঁদা তুলছিল কিছু যুবক। রাত ১টা নাগাদ তেমনই দু’জনকে পুলিশ আটক করে। পুলিশের দাবি, এর পরেই টাপুরহাট ক্যাম্পে ফেরার পথে ওই দু’জনকে ছিনিয়ে নিতে পুরানো টাপুরহাট বাজারে পুলিশের গাড়ির উপরে হামলা হয়।

তখন পুলিশের গাড়িটির পিছনেই ছিল ওই ট্রাকটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই ট্রাকে করে গরু পাচার করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, আটক যুবকেরা মোটেই চাঁদা তুলছিলেন না। তাঁরা বরং গরু পাচারকারীদেরই বাধা দিচ্ছিলেন। সেই রাতে এই নিয়ে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশ সে সময়ে এলাকার চার জনকে মারধর করে। অভিযোগ, একটি দোকানও ভাঙচুর করেছে পুলিশ। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশও পুলিশের গাড়ি ও ওই ট্রাকটি ভাঙচুর করে। পুলিশকর্মীদেরও মারধর করা হয়। কোতোয়ালি থানা থেকে বিরাট পুলিশ বাহিনী গিয়ে তখনকার মতো পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশকর্মীরা ফিরে যান টাপুরহাট ক্যাম্পে। কিন্তু ভোর ৬টা নাগাদ ফের ক্যাম্পে হামলা করে স্থানীয় বাসিন্দারা।

জলপাইগুড়ি রেঞ্জের ডিআইজি সি এস লেপচা বলেন, “জনতা হামলা করায় বাধ্য হয়ে শুন্যে দু’রাউন্ড গুলি ছুড়তে হয়। তাতে কেউ গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা নয়। কৃষ্ণবাবুর গায়ে কী করে গুলি লাগল, তদন্ত করা হচ্ছে।”

গত রবিবার সকালেই পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে উত্তেজিত জনতা আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁ থানা চত্বরে হামলা করে। তার পরে এ দিন ফের পাশের জেলাতেই পুলিশ ক্যাম্পে ঢুকে গোলমালের ঘটনা শুনে সকালেই সেখানে চলে যান উত্তরবঙ্গের আইজি জাভেদ শামিম। তিনি বলেন, “জয়গাঁতে একটা অপরাধের কিনারা করার জন্য পুলিশের উপরে চাপ দিয়েছিল জনতা। কিন্তু টাপুরহাটে তেমন বড় কিছুই ঘটেনি। তবু কেন জনতা পুলিশের উপরে চড়াও হল, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।” তিনি জানান, গরু পাচারকারীদের সঙ্গে পুলিশের কিছু কর্মীর যোগসাজস থাকার যে অভিযোগ উঠেছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, “জনতার ভিড়ে সমাজবিরোধীদের একটি দল মিশে গিয়ে পুলিশের উপরে হামলা চালিয়েছে।”তিনি জানিয়েছেন, যে যুবকের গুলি লেগেছে রাজ্য সরকার তাঁর চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করবে।

অন্য বিষয়গুলি:

cow trafficking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE