Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

গনিকে শ্রদ্ধা জানিয়েই কংগ্রেসকে তোপ

প্রয়াত কংগ্রেস নেতা বরকত গনিখান চৌধুরীকে শ্রদ্ধা জানালেও, তাঁর দল কংগ্রেসকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মালদহে তৃণমূলের কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে গনিখানের নাম ভাঙানোর অভিযোগও তুলেছেন কংগ্রেস নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে।

মালদহে ডিএসএ ময়দানে কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মালদহ উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সৌমিত্র রায় (বাঁ দিকে) ও মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন। বুধবার ছবিটি তুলেছেন মনোজ মুখোপাধ্যায়।

মালদহে ডিএসএ ময়দানে কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মালদহ উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সৌমিত্র রায় (বাঁ দিকে) ও মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী মোয়াজ্জেম হোসেন। বুধবার ছবিটি তুলেছেন মনোজ মুখোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৪ ০১:৪৭
Share: Save:

প্রয়াত কংগ্রেস নেতা বরকত গনিখান চৌধুরীকে শ্রদ্ধা জানালেও, তাঁর দল কংগ্রেসকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মালদহে তৃণমূলের কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে গনিখানের নাম ভাঙানোর অভিযোগও তুলেছেন কংগ্রেস নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে।

এ দিন সন্ধ্যায় মালদহ জেলা ক্রীড়া সংস্থার ভরা মাঠে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “‘বরকতদাকে আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু বরকতদার নাম ভাঙিয়ে আর নয়।” কর্মিসভাতেই কংগ্রেসকে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিযোগ করার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “২০১১ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়েছিলাম। কংগ্রেস প্রাথীদের জেতাতে প্রাণপন চেষ্টা করি। কিন্তু কংগ্রেস মালদহ, মুর্শিদাবাদে গোঁজ প্রাথী দিয়ে আমাদের প্রার্থীদের হারিয়েছে। আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। যাঁরা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তাদের উচিৎ জবাব দিতে হবে। মালদহে আমাদের প্রার্থী গৌতম চক্রবর্তীকে হারাতে কংগ্রেসের সাংসদরা নির্দল প্রার্থীর হয়ে কাজ করেছিলেন। সেই সময় আমার দুঃখ হয়েছিল। কিন্তু জোটের স্বার্থে কিছু বলিনি। এবার আমাদের লড়াই সরাসরি। কংগ্রেস, বিজেপি ও সিপিএম কাউকে ছেড়ে কথা বলা হবে না”

তৃণমূল নেত্রী কংগ্রেসকে আক্রমণের জবাবে দক্ষিন মালদহের কংগ্রেস প্রার্থী আবু হাসেম খান চৌধুরী বলেন, “গনিখান চৌধুরী কংগ্রেসের সাসংদ ছিলেন। আমি তাঁর ভাই। গনিখানের নাম করে মালদহের বাসিন্দার কাছে আমি ভোট চাইব না তো কে চাইবে। তৃণমূল কংগ্রেসই এখন বরকতদার নাম ভাঙিয়ে মালদহে ভোট চাইছে।” বিশ্বাসঘাতক প্রসঙ্গে ডালুবাবু বলেন, “যদি বিশ্বঘাতকতাই করতাম তবে মানিকচক থেকে সাবিত্রী মিত্র জিততে পারতেন না।” যদিও, এদিন জেলা তৃণমূল সভানেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “বরকতদা যদি বেঁচে থাকতেন তবে আজকে বরকতদা তৃণমূলের সাংসদ হতেন। তিনি শুধু কোতোয়ালির নয়, সমগ্র মালদহের।”


পাথরঘাটায় প্রচারে ভাইচুং ভুটিয়া। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

এবারের ভোটের লড়াইটা যে অনান্যবারের থেকে পৃথক তা এ দিন কর্মিসভায় জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। কংগ্রেস বা বিজেপিকে ছাড়াই এবারের লোকসভা ভোটে তৃণমূল একা লড়ছে। সে কারণেই এবারের ভোটের প্রেক্ষাপট আলাদা বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এবার কংগ্রেস, বিজেপি ছাড়া তৃণমূল একাই লড়াই করছে। কিন্তু আমাদের সঙ্গে জনগণ রয়েছে। একদিকে বাংলার উন্নয়নের লড়াই, অন্যদিকে আমাদের লড়াই সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে।” সাম্প্রদায়ীকতার প্রশ্নে অবশ্য বিজেপির সঙ্গে কংগ্রেসকেও আক্রমণ করেছেন তিনি। ভোট এলেই কংগ্রেসের সংখ্যালঘুদের কথা মনে পড়ে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “ক্ষমতায় থাকলে ওরা সব ভুলে যায়। সংখ্যালঘুদের কাছে কংগ্রেসের ভোট চাওয়ার কোনও অধিকার নেই। দেশে সবচেয়ে বেশি দাঙ্গা অসম ও উত্তরপ্রদেশে হয়েছে। এখন সিপিএম, বিজেপি আর কংগ্রেস রাজ্যে দাঙ্গা বাধানোর জন্য চেষ্টা করছে।”

তৃণমূল দেশে তৃতীয় বৃহত্তম শক্তি হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী মালদহে দাবি করেছেন। তাঁর অভিযোগ, যাঁদের কাছে টাকা আছে তারা এক আর দু নম্বর হবে। তবে তৃণমূলই দেশকে আগামী দিনে পথ দেখাবে বলে মুখমন্ত্রী এ দিন কর্মীদের জানিয়েছেন। রাজ্যভাগ প্রসঙ্গ এনে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, “কংগ্রেস বিজেপি একজোট হয়ে অন্ধ্রপ্রদেশকে ভাগ করে দিল। এখন এরা জোট বেঁধে বাংলাকে ভাগ করতে চাইছে।”

দলে কোনরকম গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব এড়াতে মালদহে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র ও কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীকে এক হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। সন্ধ্যায় কর্মিসভায় ওই বিষয়ে কিছু না বললেও, সবার পরে দলের সব গোষ্ঠীর নেতাদের মঞ্চে ডেকে নিয়ে সর্তক করে দেন তিনি। দক্ষিণ মালদহ লোকসভা কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী তথা মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রকে এবং উত্তর মালদহ কেন্দ্রের দায়িত্ব দেওয়া হয় পর্যটন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীকে।

এ দিন কর্মিসভার প্রস্তুতি নিয়েও দলের দুই গোষ্ঠীর টানাপোড়েন চলে বলে তৃণমূলের অন্দরের খবর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE