প্রায় কোটি টাকার পরিষেবা কর জমা না করার অভিযোগে এক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করল বিক্রয় কর বিভাগ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির সুভাষপল্লি থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আবগারি ও পরিষেবা কর দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী। তাঁর বাড়ি শিলিগুড়ির ঘোগোমালির বিদ্যাসাগর কলোনিতে। সরকারি সূত্রের দাবি, তিনি নানা পণ্য ও পরিষেবার বরাত নিয়ে সরবরাহ করে থাকেন। শুক্রবার তাকে শিলিগুড়ি অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে এইচ এম রহমানের এজলাসে পেশ করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে পরিষেবা কর আইনে গত পাঁচ বছরে যথাযথ কর না দেওয়া এবং তার ভিত্তিতে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। বিক্রয় কর আধিকারিকদের দাবি, উত্তরবঙ্গে এর আগে পরিষেবা কর অমান্য করে গ্রেফতার হওয়ার ঘটনা এই প্রথম। এমনকী সারা রাজ্যে এই নিয়ে অভিযুক্ত জ্যোতির্ময়বাবু ষষ্ঠ ব্যক্তি।
আবগারি ও পরিষেবা কর বিভাগের আইনজীবী রতন বণিক জানান, অভিযুক্তকে একাধিকবার কর জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও উনি কোনও জবাব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। এদিন অভিযুক্তের শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করেছেন বিচারক। রতনবাবু বলেন, “অভিযুক্তকে সাত দিনের মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা মিটিয়ে দিতে হবে। বাকি টাকাও অবিলম্বে মিটিয়ে দিতে হবে। এ ছাড়া তার পাসপোর্ট আদালতে জমা রাখতে হবে এবং প্রতি সপ্তাহে কেন্দ্রীয় আবগারি ও শুল্ক বিক্রয় কর বিভাগের সুপারের কাছে গিয়ে হাজিরা দিতে হবে। আগামী ১১ মার্চ ফের তাকে আদালতে হাজির হওায়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
পরিষেবা কর বিভাগ সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই ব্যক্তি শোভা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি সংস্থা খুলে সমস্ত রকম পরিষেবা মূলক ব্যবসা করেন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন মোবাইল পরিষেবা সংস্থার টাওয়ার বসানোর এজেন্সিও রয়েছে তার। সুভাষপল্লির হাতি মোড়ে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে এই ব্যবসা চালাচ্ছেন তিনি। শুধু টাওয়ার বসানোর এজেন্সি নিয়েই গত পাঁচ বছরে কয়েক কোটি টাকা রোজগার করেছেন তিনি বলে দফতর কর্তাদের দাবি। সব ব্যবসা মিলিয়ে মোট ব্যবসার পরিমাণও বিপুল অঙ্কের। ওই ব্যক্তির বছরের দাখিল করা কর জমা করার হিসেবে গোলমাল কয়েক বছর আগেই কর্তাদের নজরে আসে। তার ভিত্তিতে তারা একাধিকবার নোটিশ পাঠান। কেন্দ্রীয় আবগারি ও পরিষেবা কর বিভাগের সুপার সমিত দাস শিলিগুড়ি অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। গত ২০০৭ এর মার্চ থেকেই এই অনিয়ম চলছিল বলে কর বিভাগের দাবি। দু’একটি ছোট খাট পরিষেবা দেখিয়ে কর দাখিল করলেও টাওয়ার বসানোর জন্য কোনও কর দাখিল করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। এমনকী শিলিগুড়ির অফিসের ব্যবসার পরিষেবা করের নথিভুক্তকরণ দেখিয়ে কলকাতাতেও বেআইনিভাবে ব্যবসা হয় বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy