রায়গঞ্জ সুরেন্দ্রনাথ কলেজে টিএমসিপি ও এসএফআইয়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় অভিযুক্ত দু’পক্ষের ১৯ জন সমর্থকের বিরুদ্ধে শুক্রবার জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা শুরু করল পুলিশ। টিএমসিপি ও এসএফআই সমর্থকদের মধ্যে যাতে নতুন করে সংঘর্ষ না হয় সেজন্য এ দিন কলেজের সামনে বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। এ দিনও দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা থাকলেও পুলিশি নজরদারিতে নির্বিঘ্নেই স্নাতক স্তরে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।
স্নাতক স্তরে ভর্তির জন্য আবেদনকারী পড়ুয়াদের অভিভাবক পরিচয় দিয়ে বহিরাগতদের কলেজে ঢোকানোর অভিযোগে এদিন দুপুরে টিএমসিপি ও এসএফআইয়ের অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগকে কেন্দ্র করে সাময়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কলেজের অধ্যক্ষ প্রবীর রায় বলেন, “পুলিশের হস্তক্ষেপে নির্বিঘ্নেই এ দিন ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। পরিচয়পত্র ছাড়া কোনও পড়ুয়াকে কলেজে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।” রায়গঞ্জ থানার আইসি গৌতম চক্রবর্তী বলেন, “দু’পক্ষের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেই জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সবাইকেই গ্রেফতার করা হবে। কলেজের পরিবেশ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।”
স্নাতক স্তরে আবেদনকারী পড়ুয়াদের ভর্তির কাজে সহযোগিতা করাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার টিএমসিপি ও এসএফআই সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দুপক্ষের ১১ জন সমর্থক জখম হন। তাঁদের মধ্যে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র অজিত দাস নামে টিএমসিপির এক সমর্থককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। লোহার রড দিয়ে মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এ দিন অজিতের মাথার স্ক্যান করানো হয়। এর পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ছুটি দিয়ে বাড়িতে একসপ্তাহ বিশ্রামের পরামর্শ দেন।
এ দিন হাসপাতালের বেডে বসে অজিত অভিযোগ করে বলেন, “আবেদনকারী কয়েকজন পড়ুয়াকে ভর্তির ফর্ম পূরণ করে দিচ্ছিলাম। সেই সময় এসএফআইয়ের ১০-১২ জন আমাকে ধাক্কা মেরে বেঞ্চ থেকে ফেলে দেয়। তার পরে আমার মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এর পর আর কিছু মনে নেই।”
পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতেই টিএমসিপির তরফে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র বিবেক গুপ্ত রায়গঞ্জ থানায় কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক গৌরব সাহা সহ এসএফআইয়ের পাঁচ সমর্থকের নামে মারধর ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন। পক্ষান্তরে, এসএফআইয়ের তরফে কলেজের ছাত্র সংসদের সহকারী সাধারণ সম্পাদক সায়শ্রী ভৌমিক টিএমসিপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অজয় সরকার সহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে পুলিশে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত এসএফআই সমর্থকদের বিরুদ্ধে ৩২৬, ৩০৭ ও ৩৪ ও টিএমসিপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে ৩২৬, ৩৫৪ ও ৩৪ ধারায় মামলা শুরু হয়েছে।
টিএমসিপির জেলা সভাপতি অজয়বাবু বলেন, “এসএফআই আমাদের উপর হামলা চালিয়ে আমাদেরই মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। এসএফআই এদিনও স্নাতক স্তরে আবেদনকারী পড়ুয়াদের অভিভাবকের নাম করে বহিরাগতদের কলেজে ঢুকিয়েছে। পুলিশ ও কলেজ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা ভাল নয়।”
যদিও এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক প্রাণেশ সরকারের পাল্টা অভিযোগ, টিএমসিপি এদিন পুলিশের সামনেই অভিভাবকদের নাম করে বহিরাগতদের কলেজে ঢুকিয়ে দেয়। তাঁর অভিযোগ, “খুনের হুমকি দিয়ে এসএফআইয়ের সমর্থকদের কলেজ থেকে তাড়িয়ে দেয়।” পুলিশ উপযুক্ত তদন্ত না করে বিনা দোষে আমাদের একজন সমর্থককে গ্রেফতার করলে সংগঠনের তরফে অনির্দিষ্টকালের জন্য ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হবে বলে হুমকি দেন এসএফআই নেতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy