ট্রেনের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ানো নৌবাহিনীর এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে রেল সুরক্ষা বাহিনীর এক অফিসারের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনে। মারধরের জেরে ওই ব্যক্তির হাত ভেঙে গিয়েছে বলেও অভিযোগয় তাঁকে প্রথমে জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে ও পরে এলাকার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। নার্সিংহোম সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তির নাম স্বরাজ গুহ নিয়োগী। রাত পর্যন্ত স্বরাজবাবুর পরিবারের পক্ষ থেকে আরপিএফের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়নি।
ওই ঘটনার সময়ে স্টেশনে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে বাবন পাল, তিলক সরকার, বিপুল দত্তরা জানান, আরপিএফ আচমকা লাঠি চালাতে শুরু করলে সকলে পালাতে শুরু করেন। তখনই ওই বৃদ্ধকে নীচে পড়ে আর্তনাদ করতে দেখা যায়। তা সত্ত্বেও অভিযোগ হয়নি কেন? স্বরাজবাবুর শ্যালক অলোক সরকার বলেছেন, “আমার ভগ্নিপতির একটাই ছেলে। পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করে ছেলের কেরিয়ার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই ভগ্নিপতি কোথাও অভিযোগ করতে চাইছেন না।” তবে স্টেশনে যে গোলমাল হয়েছে সে কথা স্বীকার করেছেন জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশনের আরপিএফের ইনচার্জ প্রাণকৃষ্ণ রায়। তিনি বলেন, “টিকিটের লাইনে দাঁড়ানো সকলের পরিচয়পত্র পরীক্ষা হচ্ছিল। তখন ওই ব্যক্তি তা দেখাতে না-পেরে হট্টগোল বাঁধান। ভিড়ের মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। তখন ধাক্কাধাক্কিতে আঘাত লেগে থাকতে পারে।” ওই বৃদ্ধ পড়ে যাওয়ার পরে কেন তাঁকে তুলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করায়নি আরপিএফ? জবাবে রেল সুরক্ষা বাহিনীর দাবি ওই সময়ে বৃদ্ধের ছেলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এর প্রতিবাদে সরব জলপাইগুড়ির জনপ্রতিনিধির অনেকে। পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “আমরা চাই দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা হোক।” জলপাইগুড়ির তৃণমূল সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। কেন এক জন প্রবীণ ব্যক্তির গায়ে হাত দেওয়া হল সেটা রেল কর্তাদের কাছে জানতে চাইব।” জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপি সভাপতি দীপেন প্রামাণিক জানান, তিনি স্বরাজবাবুর সঙ্গে কথা বলবেন। প্রয়োজনে রেলমন্ত্রীকে বলে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন বিজেপি নেতা। তৃণমূল প্রদেশ কমিটি সম্পাদক কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, “প্রবীণদের সঙ্গে এত বড় অমানবিক আচরণের অধিকার রেল পুলিশকে কে দিয়েছে? শহরবাসীর উচিত প্রতিবাদ করা।”
এ দিন সকালে কলকাতা যাওয়ার তৎকালে টিকিট কাটতে ছেলে সৌরভকে নিয়ে টাউন স্টেশনে যান ২০১১ সালে অবসরপ্রাপ্ত স্বরাজবাবু। তিনি জানান, স্টেশনে প্রচুর ভিড় ছিল। লাইনে দাঁড়িয়ে তিনি ছেলেকে পরিচয় পত্র জেরক্স করতে পাঠান। অভিযোগ, ওই সময় রেল পুলিশে কয়েকজন এসে তাঁর কাছে পরিচয়পত্র দেখতে চায়। পরিচয় পত্র ছেলে জেরক্স করতে গিয়েছে জানালে পুলিশ কর্মীরা তাঁকে লাইনের বাইরে দাঁড়াতে বলেন। স্বরাজবাবুর অভিযোগ, “আরপিএফ অফিসারকে বলি ছেলে আসবে। লাইন থেকে সরলে টিকিট তো পাব না। সে সব না শুনে ওরা আমাকে বেধড়ক পেটাল।” স্বরাজবাবুর ছেলে সৌরভ বলেন, “জেরক্স করে ফিরে হইচই শুনে দৌড়ে ভিতরে ঢুকে দেখি বাবা মাটিতে পড়ে আছেন। যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। কেন বাবাকে মারা হচ্ছে জানতে চাইলে রেল পুলিশ উল্টে ধমক দিয়ে বলে বাড়াবাড়ি করলে মুশকিল হবে। কোনমতে বাবাকে তুলে নিয়ে সোজা হাসপাতালে চলে যাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy