প্রতীকী ছবি।
কোভিড পরিস্থিতিতে নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবায় খামতি নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠেছে গত কয়েক দিনে। এ বার হৃদ্রোগে আক্রান্ত এক রোগীকে নিয়ে জরুরি পরিস্থিতিতে চারটি হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ করলেন তাঁর পরিবারের লোকজন। এর মধ্যে দু’টি কলকাতার হাসপাতাল। শেষে পরিস্থিতি এমন হয় যে, কলকাতা থেকে রোগীকে নিয়ে শনিবার ফের বর্ধমানের পথে ফিরে যেতে হয়েছে পরিজনদের।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্ধমানের কেতুগ্রামের শিলুরি গ্রামের বাসিন্দা, বছর বাষট্টির লাল মহম্মদ গত সোমবার হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। তাঁকে সে দিন কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। যদিও পরের দিনই তাঁকে সেখান থেকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। মঙ্গলবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ওই রোগীকে ভর্তি নিলেও তাঁর অবস্থার সে রকম উন্নতি হয়নি বলে রোগীর পরিবারের দাবি। অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় শনিবার তাঁকে কলকাতার বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয় বলে পরিবার জানায়।
এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ বর্ধমান থেকে রোগীকে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন বাড়ির লোকজন। রোগীর নাতি শামিম আহমেদ অভিযোগ করেন, এসএসকেএম হাসপাতালের অ্যানেক্স বিল্ডিং বাঙুর হাসপাতালে পৌঁছনোর পরে জানানো হয়, রোগীকে সেখানে ভর্তি নেওয়া যাবে না। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেতে বলা হয়। তাঁর কথায়, “বাঙুর থেকে আমাদের বলা হয়, শয্যা ফাঁকা নেই। বহু রোগী আসছেন।” এর পরে এনআরএসে গেলে জানানো হয়, ভর্তি নেওয়া হলে রোগী করোনা-আক্রান্ত কি না, তা জানার জন্য দিন চারেক আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখতে হবে। কিন্তু রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক। পরিজনদের সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়। শামিমের দাবি, এই টানাপড়েনে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালের গেটেই কেটে যায় তাঁদের।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, গত ১৯ তারিখেই রোগীর করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছিল। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছুই শুনতে চাননি বলে অভিযোগ। শেষে উপায় না দেখে বর্ধমানের হাসপাতালেই ফেরত যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয় বলে জানান তাঁরা। শামিমের প্রশ্ন, ‘‘রোগীকে নিয়ে প্রায় ১১০ কিলোমিটার গিয়ে দু’টি হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসার ব্যবস্থা হল না। আমাদের দোষ কোথায়?’’
বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা এসএসকেএম হাসপাতালের সুপার রঘুনাথ মিশ্র বলেন, ‘‘রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে, এ কথা ঠিক নয়। আসলে সব সময়েই শয্যার একটা ঘাটতি থাকে। বহু মানুষ প্রথমেই এসএসকেএমে আসেন। তাই হয়তো কোনও কারণে শয্যার অভাব থাকায় অন্য হাসপাতালে দেখাতে বলা হয়েছে।’’
নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই রোগীকে আইসোলেশনে রাখার কথা বলা হয়ে থাকলে তাতে ভুল নেই। আইসোলেশনে রোগীর চিকিৎসা হয় না, এটা ভুল কথা। পরিবারের লোকজন রোগীকে এনআরএসে রাখতে পারতেন।’’
রোগীর নাতি যদিও বলেন, “কোনও হাসপাতালই ঠিক করে কথা বলে না রোগীর পরিবারের সঙ্গে। অসহায় অবস্থায় কলকাতায় ঘুরে বেড়ানোর থেকে আমরা নিজেদের জেলায় ফিরে যাওয়াই বলে ভাল মনে করেছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy