Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
durga puja

Durga Puja 2021: আতঙ্ক নয়, জনজোয়ারে হাসি চওড়া পুজোকর্তাদের

এ দিন সকাল থেকেই প্রবল ভিড় ছিল শহরের বেশ কিছু মণ্ডপের সামনে, যার মধ্যে এগিয়ে ছিল শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব।

জগৎ মুখার্জি পার্ক

জগৎ মুখার্জি পার্ক ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২১ ০৮:৪৭
Share: Save:

আদালতের নির্দেশ, প্রশাসনের কড়া অবস্থান, মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরেও ভিড়ের চিত্র বদলাল না শহরের একাধিক পুজো মণ্ডপের সামনে। যা প্রশ্ন তুলে দিল, দুর্গোৎসব পেরোলেই কি ফের লাফিয়ে বাড়বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা? তৃতীয় ঢেউ এলে আবারও কি দেখা যাবে মৃত্যু-মিছিল? ভয় ধরানো ভিড়ের চিত্র দেখে প্রশ্ন উঠেছে পুজোকর্তাদের দায়িত্ববোধ এবং পুলিশের কর্তব্য পালন নিয়েও। যদিও দু’পক্ষের কাছেই এ নিয়ে দায়সারা উত্তর মিলেছে।

ভিড়ের নিরিখে গত কয়েক দিনকে টেক্কা দিয়েছে চতুর্থীর সন্ধ্যা। তবে এ দিন সকাল থেকেই প্রবল ভিড় ছিল শহরের বেশ কিছু মণ্ডপের সামনে, যার মধ্যে এগিয়ে ছিল শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব। সেখানে দুপুর থেকেই তিল ধারণের জায়গা ছিল না। দূরত্ব-বিধি মানার চেষ্টা তো দূর, অধিকাংশেরই মুখে দেখা যায়নি মাস্ক। এক দর্শনার্থীর মন্তব্য, ‘‘দূর থেকেই এই মণ্ডপের আলো দেখা যাচ্ছে। ওই টানেই ছুটে এসেছি। এত গরমে মাস্ক পরে থাকা যায়? তাই পকেটেই ঢুকিয়ে রেখেছি।’’ এই পুজোর ভিড় নিয়ে আগের দিনই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভিড় দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। এমনকি, এত উঁচু মণ্ডপ তৈরির এবং তাতে লেজ়ার আলো লাগানোর অনুমতি দমকল বা পুলিশ দিল কী ভাবে, তা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি। এই পুজোর প্রধান কর্তা রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু স্বয়ং। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা না গেলেও পুজোর অন্যতম কর্তা দিব্যেন্দু গোস্বামী বলেন, ‘‘কলকাতা আমোদপ্রিয় জায়গা। এখানকার বাসিন্দারা ভাবছেন, সবই যখন খুলে দেওয়া হয়েছে, ঘরে থাকব কেন?’’

একই ধরনের মন্তব্য চেতলা অগ্রণীর কর্তা সমীর ঘোষের। চেতলাতেও যে ভিড় দেখা গিয়েছে, তা আতঙ্ক ধরাতে বাধ্য। সমীর বললেন, ‘‘করোনার আর ভয় নেই। তা ছাড়া, ‘জো ডর গয়া, ও মর গয়া’।’’ ভিড়ের ভয় নিয়ে এত চর্চা সত্ত্বেও সেই ভিড় হওয়ারই আশা করছেন লেক শিবমন্দিরের পুজোকর্তা পার্থ ঘোষ। তিনি বলছেন, ‘‘আজ শনিবার হওয়ায় ভিড় মাত্রাতিরিক্ত। মানুষ আর ঘরে থাকতে চাইছে না। নির্দেশ যা-ই থাক, এমন ভিড়ই আশা করেছিলাম।’’ এই ভিড়ের জেরেই এ দিন সকাল থেকে যানজট ছিল বহু রাস্তায়। ৩০ মিনিটের পথ অনেককেই পেরোতে হয়েছে দেড়-দু’ঘণ্টায়। পুজোকর্তা এবং ট্র্যাফিক পুলিশের দাবি, গাড়ি চড়ে ঠাকুর দেখার হিড়িকেই এই কাণ্ড।

‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সাধারণ সম্পাদক তথা হাতিবাগান সর্বজনীনের পুজোকর্তা শাশ্বত বসু আবার বললেন, ‘‘আদালত, সরকার বা পুলিশের যা কিছু নির্দেশ, তা পঞ্চমী থেকে বলবৎ হবে। সেই সুযোগেই হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েছেন।’’ দায়িত্ব পালনের প্রসঙ্গ অবশ্য শোনা গেল একমাত্র সুরুচি সঙ্ঘের কর্তা কিংশুক মৈত্রের গলায়। তাঁর কথায়, ‘‘কালই ভিড় এমন হয়েছিল যে, প্রায় ব্যারিকেড ভাঙার অবস্থা। এত লোকের করোনা সংক্রমণ আটকাব কী করে, তা নিয়েই নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। সেটাও কিন্তু পুজো কমিটিরই দায়িত্ব।’’

পুলিশ কী করছে? কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার এক কর্তা শুধু বললেন, ‘‘রাস্তায় পুলিশ ছিল। সব বিধি বলবৎ করতে কঠোর পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’

তবে চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের কথায়, ‘‘ভিড়ের যা চিত্র, তাতে বিধি পালন হচ্ছে বলে মনে হয় না।’’ চিকিৎসক কুণাল সরকার আবার বললেন, ‘‘সামাজিক অন্যায় করা হচ্ছে। আদালতের গত বারের রায় যদি দুধ হয়, এ বার তাতে জল মিশিয়ে ঘুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

durga puja Durga Puja 2021 Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE