ফাইল চিত্র।
সাগরদ্বীপ, ফ্রেজ়ারগঞ্জ, নামখানা-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকায় দ্রুত বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করার আর্জি জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠি দিলেন সুন্দরবনের পুলিশ সুপার। সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার বৈভব তিওয়ারি ওই চিঠিতে লিখেছেন, এক মাস আগে আমপান ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছিল। তার পর থেকে বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও বিদ্যুৎহীন। তার ফলে নিত্যদিনই জনগণ বিভিন্ন বিডিও অফিস এবং অন্যান্য দফতরে বিক্ষোভ দেখাতে চলে আসছেন। এই পরিস্থিতি সামলাতেই বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করা প্রয়োজন বলে তিনি চিঠিতে জানিয়েছেন। এমনকি, ওই চিঠিতে সব এলাকার নামসম্বলিত একটি তালিকাও জুড়ে দিয়েছেন। কেন এতদিনেও সমস্যার সমাধান হয়নি, সে প্রশ্নের সদুত্তর দেয়নি বিদ্যুৎ দফতর।
প্রশাসনের খবর, আমপানে কাকদ্বীপ মহকুমার পাড়ায় পাড়ায় বিদ্যুতের তার ও খুঁটির পাশাপাশি বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ৩৩ কেভি-র লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ওই ৩৩ কেভির লাইন সারাই না-হলে বিদ্যুতের মূল সংযোগ হবে না। সেই কাজই এখনও শুরু হয়নি। এর ফলে রাতে হ্যারিকেন বা কুপির আলো জ্বালিয়ে ভাঙা ঘরে বসবাস করতে হচ্ছে মানুষকে। বর্ষাকালে সুন্দরবনে সাপের উপদ্রব রয়েছে। ফলে সেই বিপদ বাড়ছে, তার পাশাপাশি কুপি থেকে আগুন লেগে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকছে। এর ফলে মানুষজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠছেন। পুরো ক্ষোভ সামলাতে হচ্ছে পুলিশকে। আশ্বাস দিয়েও কাজ না-হওয়ায় পুলিশকর্মীদের উপরেও চড়াও হচ্ছে মানুষ। এক পুলিশ অফিসারের কথায়, ‘‘এত দিন বিদ্যুৎ নেই। বিক্ষোভ দেখালে লাঠিপেটা করে তো তাড়াতে পারব না! কিন্তু পুলিশই বা কী করে ঝঞ্ঝাট সামলাবে?’’
ঝড়ের পরেই রাজ্যে বিদ্যুৎ দফতর, বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা এবং ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে অপেশাদারিত্ব ও বেহাল পরিষেবার অভিযোগ উঠেছিল। বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ, অবরোধও হয়। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। কিন্তু তার পরেও বিদ্যুৎ দফতর ও তাঁর অধীনস্থ সংস্থাগুলি কাজে কতটা সক্রিয় হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার অবস্থা। প্রশাসন সূত্রের দাবি, হাজার তিরিশেক পরিবার এখনও বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কাকদ্বীপে এসে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বলেছিলেন। তার পরেও কেন কাজ হল না?’’ ওই কর্তার মতে, কাকদ্বীপ সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত তা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু পরিষেবা স্বাভাবিক করার কাজ শুরু হল অন্য এলাকায়!
আরও পড়ুন: কংক্রিটের বাঁধ রুখেছে আমপানের দাপট
দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলাশাসকের অফিস সূত্রে খবর, এসপি-র ওই চিঠি খতিয়ে দেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার মুখপাত্র বিশ্বরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই চিঠির ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হবে।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘সব খতিয়ে দেখার পর রিপোর্ট তৈরি করে তা নবান্নে পাঠানো হবে। নবান্নের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’ তা হলে বিদ্যুৎ আসবে কবে? এই প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছে দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy