সব কিছু ঠিক চললে, চলতি সপ্তাহের শেষেই বন্ধ চা বাগান পরিদর্শন করতে উত্তরবঙ্গে আসছেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ।
গত মাসে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সফর চূড়ান্ত হলেও, পুরভোটের আচরণবিধি লাগু থাকায় বৈঠক পিছিয়ে যায়। সূত্রের খবর আগামী ১৬ মে শিলিগুড়িতে আসছেন সীতারামণ। সে দিনই ডুয়ার্সের বন্ধ রেডব্যাঙ্ক এবং ধরণীপুর চা বাগান পরিদর্শনে যেতে পারেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। পরদিন উত্তরবঙ্গের চা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষকে ডেকে বৈঠক করবেন তিনি। শিলিগুড়িতেও ওই বৈঠক হওয়ার কথা। সরকারি ভাবে এখনও বৈঠকের কথা জানানো না হলেও, ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের তরফে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরসূচি তৈরি করে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি দফতরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ বাগান খোলা নিয়ে রাজ্য সরকার থেকে শুরু করে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন বারবার কেন্দ্রীয় সরকারের উপর দায় চাপিয়ে এসেছে। অন্য দিকে বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের জন্য নানা সুবিধে দেওয়া এবং ন্যূনতম মজুরি লাগু করা নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চেয়েছে চা শ্রমিক সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর বৈঠকের দিকে চা শ্রমিক সংগঠনগুলি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সফর ঘিরে রাজনীতির ছায়াও পড়েছে। গত এপ্রিল মাসেই সীতারামণের সফর সূচি ঠিক হয়ে গিয়েছিল। শিলিগুড়ির একটি হোটেলে বৈঠকের চিঠিও বিলি হয়ে যায়। শিলিগুড়িতে পুরভোটের আচরণবিধি জারি রয়েছে বলে বৈঠক নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে আপত্তি জানানো হয়েছিল বলে জানা যায়। তারপরেই বৈঠক পিছিয়ে যায়। তবে পুরভোটের আচরণবিধি এড়াতে দার্জিলিং বা আলিপুরদুয়ারে বৈঠকের দাবি জানানো হলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সফর পিছিয়ে যায়।
ডুয়ার্সে বর্তমানে ৭টি চা বাগান বন্ধ রয়েছে। এই মধু, বান্দাপানি, ঢেকলাপাড়া, সুরেন্দ্রনগর, রেডব্যাঙ্ক, ধরণীপুর এবং সোনালি চা বাগানে অর্ধাহার, অপুষ্টিতে শ্রমিক মৃত্যুর একাধিক ঘটনা ঘটেছে বলে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের দাবি। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বাগান খুললেও এই বাগানগুলি বন্ধই রয়েছে। কয়েকটি বাগানের জমির লিজ বাতিল হয়ে গিয়েছে। চা বাগান কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয় সরকারের দায়িত্বভুক্ত থাকায় বাগান খুলতে দুই সরকারের সাহায্য প্রয়োজন বলে শ্রমিক সংগঠনগুলির দাবি। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বন্ধ বাগান পরিদর্শন করে একদিকে যেমন শ্রমিকদের ত্রাণ সরবারহে কেন্দ্রীয় সাহায্যের কথা ঘোষণা করতে পারেন, তেমনই সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে বাগান খোলার সমাধান সূত্র বের করবেন।
বন্ধ বাগান ছাড়াও রুগ্ন এবং ধুঁকতে থাকা চা বাগানগুলিও সরকারি অনুদানের দাবি তুলেছে। শ্রমিক সংগঠনগুলির তরফেও বিভিন্ন বাগানের শ্রমিক আবাস সংস্কার করা, বাগানের হাসপাতালগুলির হাল ফেরানো, যে বাগানে হাসপাতাল নেই সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে জানানো হবে। যৌথ মঞ্চের দাবি, গত বছরের অগস্ট মাসে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে গেলে উত্তরবঙ্গে এসে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছিলেন সীতারামণ। ডান-বাম ২৪টি চা শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক জিয়াউর আলম বলেন, ‘‘বৈঠকের অনেক দেরি হয়ে গেল। চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি দাওয়ায় কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চেয়েছি। দুই সরকারের সাহায্য ছাড়া চা শ্রমিকদের সুষ্ঠু সমাধান সম্ভব নয়।’’
এ দিকে, তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠন তৃণমূল টি প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি অলোক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরাও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে একাধিক দাবি জানিয়েছিলাম। তার মধ্যে চিকিৎসা, বিদ্যুৎ সহ বিভিন্ন দাবি জানানো হয়েছিল, তার কোনটাই শোনা হয়নি। দেখা যাক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কী পদক্ষেপ করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy