সুমন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
পাঁচ বছর আগে ঘরের মধ্যে জ্বালানি গ্যাস ঢুকে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুমন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই ঘটনায় পরিবেশগত এবং সুরক্ষার গাফিলতির দায়ে গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থা ‘গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশন লিমিটেড’কে ৬৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালতের বিচারপতি এস পি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ-সদস্য এস এস গরবিয়ালের ডিভিশন বেঞ্চ। এক মাসের মধ্যে মৃতের পরিবারকে সেই ক্ষতিপূরণ না-দিলে বাড়তি সুদ চাপবে।
আইনজীবী ও পরিবেশকর্মীরা বলছেন, রাজ্যে এমন রায় বিরল। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন অফিসার এবং পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘এই রায় বিরলতম। বহু বছর আগে সিলিকোসিসের এক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এমন রায় দিয়েছিল।’’ তিনি জানান, ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার পর এই ধরনের ঘটনায় জরিমানা বিধি তৈরি করা হয়েছিল।
২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি মধ্য কলকাতার আরপুলি লেনের একটি বাড়ির ঘর থেকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সুমন্তিকাকে। অচেতন অবস্থায় মেলে ঘরের আর এক বাসিন্দা সুবর্ণা লামাকেও। তদন্তে জানা যায়, ঘরের ভিতরে কোল গ্যাস ঢুকে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। গ্যাস সরবরাহের পাইপ ফেটে গিয়েছিল বলে অনুমান। ২০১৬ সালে মামলা করেন সুমন্তিকার বাবা দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
দেবাশিসবাবুর আইনজীবী সোমনাথ রায়চৌধুরী জানান, গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থার বক্তব্য ছিল, গ্যাস ‘লিক’ করেনি এবং ওই গ্যাস বাতাসের থেকে হালকা এবং ‘গ্রিন’ গ্যাস, তাই মৃত্যু হতে পারে না। যদিও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ হলফনামা দেয়, ওই গ্যাসে যে পরিমাণ কার্বন মনোক্সাইড থাকে তা দীর্ঘক্ষণ ধরে শরীরে ঢুকলে মৃত্যু হতে পারে। ফরেন্সিক পরীক্ষায় সুমন্তিকার ঘর থেকে সংগৃহীত বাতাসের নমুনার সঙ্গে সরবরাহকারী সংস্থার গ্যাসের নমুনা মিলে যায়। সুমন্তিকা বেঁচে থাকলে তাঁর আয় কমপক্ষে বছরে ৪ লক্ষ টাকা হতে পারত বলে ধার্য করে আদালত এবং সেই হিসেবে ৬৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের রায় দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy