Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

‘কড়া’ বলেই আপত্তি যান আইনে

নয়া আইনে আপত্তি কেন? নবান্নের বক্তব্য, সংশোধিত মোটরযান আইন ‘খুব কড়া’।

পুলিশের নাকা তল্লাশি। — ফাইল চিত্র

পুলিশের নাকা তল্লাশি। — ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৩:২১
Share: Save:

শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ওড়িশা-মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যও এখন কেন্দ্রের সংশোধিত মোটরযান আইন বলবৎ করছে না।

নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতও নতুন আইনে প্রস্তাবিত জরিমানার অঙ্ক ৯০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নতুন ‘মোটর ভেহিক্‌লস অ্যাক্ট’ নিয়ে বেশ খানিকটা অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। ক্ষোভের সঙ্গেই তাঁর হুঁশিয়ারি, নতুন ট্র্যাফিক আইন না-মানলে রাজ্যগুলিই দায়ী থাকবে।

নয়া আইনে আপত্তি কেন? নবান্নের বক্তব্য, সংশোধিত মোটরযান আইন ‘খুব কড়া’। তাই এখনই সেটা বলবৎ করা হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার নবান্নে বলেন, ‘‘আমরা আপাতত এই আইন প্রয়োগ করছি না। এটা খুব কড়া। আমরা ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রচার করছি। তাতে দুর্ঘটনার হার কমেছে। নতুন আইন বলবৎ করলে মানুষের উপরে (জরিমানার) বাড়তি চাপ পড়বে। টাকার বদলে মানবিক ভাবে এর মোকাবিলা করা উচিত।’’

কী আছে নতুন আইনে?

পরিবহণ দফতরের বক্তব্য, বিভিন্ন ক্ষেত্রে ট্র্যাফিক বিধি ভাঙলে জরিমানা অনেকটাই বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে নতুন আইনে। গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও লাইসেন্সের ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই জরিমানা চালু হলে মানুষের উপরে চাপ বাড়বে। তাই এখনই সংশোধিত আইন চালু করতে চাইছে না রাজ্য সরকার। অন্য কিছু রাজ্যও নতুন আইন চালু করেনি।

পশ্চিমবঙ্গের মতো মহারাষ্ট্র ও ওড়িশা এখনই ওই আইন চালু করছে না। মোদীর গুজরাত নতুন আইন চালু করার কথা ঘোষণা করেছে ঠিকই। কিন্তু তা কেন্দ্রীয় সরকারের তৈরি আইনের তুলনায় অনেকটাই মোলায়েম। গুজরাত সরকার নতুন মোটরযান আইনে জরিমানার অঙ্ক প্রায় ৯০ শতাংশ কমিয়ে রূপায়ণ করার কথা বলার পরেই গডকড়ীর কথায় ফুটে উঠেছে ক্ষোভ।
তাঁর দাবি, রাজস্ব বাড়াতে নয়, মানুষের প্রাণ বাঁচাতেই জরিমানা বাড়ানো হয়েছে। মানুষের জীবনের থেকে টাকা বড় নয়।

সব রাজ্যের সহযোগিতা চেয়ে গডকড়ী বলেছেন, ‘‘প্রতি বছর দেড় লক্ষ মানুষ পথ-দুর্ঘটনায় মারা যান। তাঁদের মধ্যে ৬৫ শতাংশেরই বয়স ১৮ থেকে ৩৫ বছর।’’

একই সঙ্গে গডকড়ী জানিয়ে দেন, এই ব্যাপারে তিনি রাজ্যগুলিকে জোর করতে রাজি নন। এই আইন যৌথ তালিকাভুক্ত বিষয়। ফলে রাজ্যেরও অধিকার রয়েছে এ বিষয়ে আইন তৈরি করার।
জোর করে এই আইন চাপিয়ে দেওয়া যায় না। রাজ্যই ঠিক করবে, পথ-দুর্ঘটনা থেকে তারা মানুষকে কী ভাবে বাঁচাবে।

পথ-দুর্ঘটনা থেকে মানুষকে বাঁচাতে ২০১৬ সাল থেকেই ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রকল্পের উপরে ভরসা করে আসছে বাংলা। রাজ্য প্রশাসনের দাবি, এই প্রকল্প চালু হওয়ায় রাজ্যে দুর্ঘটনা কমেছে।

তবে পুলিশের একাংশের মতে, এই কর্মসূচিতে রাজ্যে ট্র্যাফিক ব্যবস্থার পরিকাঠামোগত উন্নতি, সচেতনতা প্রসার হলেও আইনের শাসন কতটা বলবৎ হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছেই। গোড়ায় হেলমেটহীন সওয়ারিকে পেট্রল পাম্প থেকে জ্বালানি না-দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আলগা হয়েছে সেই রাশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Traffic Traffice Rule
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy