বিজেপি দফতরে মৌমিতার বক্তৃতা শুনছেন সৌমিত্র। ফাইল চিত্র
মৌমিতা সাহাকে কেন যুব মোর্চার রাজ্য সম্পাদক করা হল? এই প্রশ্নে জেরবার বিজেপি। যত রাগ মোর্চার রাজ্য সভাপতি তথা বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের উপর। একাংশের অভিযোগ, সৌমিত্রের পছন্দের হওয়াতেই মৌমিতার এমন উত্থান। সৌমিত্র অবশ্য তা অস্বীকার করেছেন। কিন্তু এ বার সেই অভিযোগ নতুন করে উঠল রবিবার সাংসদ তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মৌমিতাকে ট্যাগ করে ছবি পোস্ট করায়। মোর্চা নেতাদের অনেকেরই প্রশ্ন, এতজন রাজ্যস্তরের নেতা থাকতে কেন মৌমিতাকেই ট্যাগ করলেন?
গত কয়েকদিন ধরেই মৌমিতাকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রশ্নে যুব মোর্চায় বিক্ষোভ চলছে। যাঁরা সরব হয়েছেন তাঁদের (আরুষ সাহু, বনশ্রী মণ্ডল এবং ঝিলম বন্দ্যোপাধ্যায়) সংগঠনের অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই গ্রুপে যাতে অ্যাডমিন ছাড়া আর কেউ কোনও পোস্ট করতে না পারেন সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তাতে সৌমিত্রর বিরুদ্ধে ক্ষোভ আরও বেড়েছে। মোর্চার পুরনো নেত্রী প্রিয়ঙ্কা শর্মা গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন।
এমন পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধদের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠকে বসতে চলেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। বিকেল ৩টের সময় বিক্ষুব্ধদের নিয়ে রাজ্য দফতরে বৈঠক করবেন সহ সভাপতি তথা যুব মোর্চার পর্যবেক্ষক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠক প্রসঙ্গে রাজু বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছেন যুব মোর্চার কয়েকজন। মঙ্গলবার কথা বলব বলে জানিয়েছি। এটা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিছু ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধানও বেরিয়ে আসবে।’’
সৌমিত্রর বিরুদ্ধে সংগঠনে ‘স্বৈরতন্ত্র’ চালানোর অভিযোগও তুলেছেন ক্ষুব্ধরা। বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে চিঠিও পাঠিয়েছেন তাঁরা। ই-মেল মারফত পাঠানো সেই অভিযোগ রাজ্য স্তরের অন্য বিজেপি নেতার পাশাপাশি গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছেও। এর পরেই বিজেপি নেতৃত্ব ক্ষুব্ধদের সঙ্গে কথা বলার সিদ্ধান্ত নেন বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর।
‘মাননীয় সাংসদ তথা রাজ্য যুব সভাপতি সৌমিত্র খাঁ মহাশয় যুব মোর্চাতে একনায়কতন্ত্র নীতি চালাচ্ছেন, বারংবার ভারতীয় জনতা পার্টির রীতিনীতিকে বুড়ো আঙুলে দেখিয়ে নিজের ইচ্ছা মতো মেয়েদের যারা দু’মাস, ছ’মাস এই পার্টিতে এসেছেন তাঁদেরকে সরাসরি যুব মোর্চার রাজ্যের কোর কমিটিতে পদাধিকার দিচ্ছেন।’ একই সঙ্গে সৌমিত্রর বিরুদ্ধে মোর্চার পুরনো মহিলা কর্মীদের উপেক্ষার অভিযোগও তোলা হয়েছে। সৌমিত্রর বিরুদ্ধে এত অভিযোগ উঠলেও তিনি রীতিবিরুদ্ধ কাজ করেছেন বলে মানতে নারাজ বিষ্ণুপুরের সাংসদ। শনিবার তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘এমন কোনও নিয়ম নেই যে করা যাবে না। মোর্চার সভাপতি হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে আমার। আর মৌমিতা আমার পরিচিত এমন কোনও ব্যাপার নেই। যোগ্যতার বিচারেই পদ দিয়েছি। সম্প্রতি ১৯ জনকে দলের বৈঠকে বক্তব্য পেশ করতে বলেছিলাম। সেখানে মৌমিতার কথা শুনে মনে হয়েছিল ও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে পারবে। আর একা সিদ্ধান্ত নিইনি। সংগঠনের অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলেই ঘোষণা করেছি।’’ ফেসবুকে মৌমিতাকে ‘ট্যাগ’ করে ছবি পোস্ট করা নিয়ে অবশ্য সৌমিত্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তাঁর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy