ছবি: সংগৃহীত
অনেক লেভেল ক্রসিংয়ের গেটে পাহারার ব্যবস্থা না-থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। ট্রেন আসছে কি না, তা জানতে না-পারায় হুটহাট লাইন পেরোতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন অনেকে। সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য এ বার আসছে চিপ-প্রযুক্তি, যা লেভেল ক্রসিংয়ে দাঁড়ানো মানুষজনকে হুঁশিয়ার করে দেবে সাইরেন বাজিয়ে।
প্রহরী না-থাকলেও ট্রেন আসছে কি না, ওই প্রযুক্তি কিছু ক্ষণ আগে থেকেই তা জানান দেবে জনতাকে। রেল জানাচ্ছে, ইসরো উপগ্রহ-প্রযুক্তি নির্ভর ওই মাইক্রোচিপ এমন ভাবে তৈরি করেছে, যার সাহায্যে ট্রেন আসার আগেই লেভেল ক্রসিং গেটের আশপাশের মানুষজন তা জেনে যাবেন। ট্রেন চলে যাওয়ার পরে সেই চিপের সতর্কীকরণ আওয়াজ বন্ধ হয়ে যাবে নিজের থেকে। সামনে লেভেল ক্রসিং থাকলে ট্রেনের চালকও পাবেন গতি কমানোর সতর্কবার্তা।
প্রাথমিক ভাবে এই প্রকল্প চালু হচ্ছে নয়াদিল্লি-মুম্বই ও নয়াদিল্লি-গুয়াহাটি রাজধানী রুটে। দুই রাজধানী রুটে ২০টি প্রহরাবিহীন লেভেল ক্রসিংয়ে ওই যন্ত্র থাকবে। ধীরে ধীরে সব রুটেই ওই যন্ত্র বসানো হবে বলে জানাচ্ছেন রেলকর্তারা। রেল সূত্রের খবর, লেভেল ক্রসিং থেকে ৫০০ মিটার আগে ট্রেন পৌঁছলে ওই চিপের সক্রিয়তায় সাইরেন বাজতে শুরু করবে। ট্রেন যত এগোবে, ততই তীব্র হবে সাইরেনের আওয়াজ। আবার লেভেল ক্রসিং পেরিয়ে ট্রেন যত দূরে যাবে, তার সঙ্গে তাল রেখে আস্তে আস্তে কমে যাবে সেই শব্দ।
পরিসংখ্যান বলছে, সারা দেশে যত রেল-দুর্ঘটনা ঘটে, তার ৪০ শতাংশের দায় অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ের। সারা দেশে এখন আট হাজার প্রহরাবিহীন লেভেল ক্রসিং আছে। ২০১৪-’১৫ সালে রেল ১১৪৮টি প্রহরাবিহীন লেভেল ক্রসিং ধাপে ধাপে বন্ধ করেছে। ২০১৫-’১৬ সালে বন্ধ হয়েছে আরও ১২৫৩টি। আগামী তিন বছরের মধ্যে বিকল্প ব্যবস্থা করে এই ধরনের সব লেভেল ক্রসিংই বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানাচ্ছেন রেল-কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ-পূর্ব রেল এ-পর্যন্ত ৫১ শতাংশ এবং পূর্ব রেল ৪৬ শতাংশ প্রহরাবিহীন লেভেন ক্রসিং বন্ধ করতে পেরেছে।
রেলের দাবি, লেভেল ক্রসিংয়ে আমজনতাকে সতর্ক করা এবং অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়ায় দুর্ঘটনা কমেছে। কমছে মৃত্যুও। ২০১৪-’১৫ সালে দুর্ঘটনা ঘটেছিল ১৩৫টি। ২০১৫-’১৬ সালে ১০৪টি। ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত দুর্ঘটনা ঘটেছে ২৯টি। বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের পরে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy