প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে আগামী শুক্র ও শনিবার টানা লকডাউনের ফলে ১৩ সেপ্টেম্বর, রবিবার সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা (নিট) পরীক্ষা দিতে তাঁদের জেইই পরীক্ষার্থীদের থেকেও বেশি সমস্যায় পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন ছাত্রছাত্রীরা। সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং জয়েন্ট এন্ট্রান্স বা জেইই দিতে রীতিমতো নাজেহাল হয়েছিলেন দূরদূরান্তের বহু পরীক্ষার্থী। কেউ পরীক্ষার দিন ভোরে রওনা দেন, কেউ বা এক দিন আগে পরীক্ষা কেন্দ্রের কাছাকাছি কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠেন। নিট দিতে ইচ্ছুক দূরের পড়ুয়ারা জানাচ্ছেন, তাঁদের সমস্যা আরও গুরুতর। কারণ, পরীক্ষার আগের দু’দিন লকডাউন থাকায় এক দিন আগে পরীক্ষা কেন্দ্রের কাছাকাছি গিয়ে থাকার উপায় নেই। পরীক্ষার দিন তাই বেরোতে হবে খুব ভোরে। গাড়িভাড়াও লাগছে প্রায় দ্বিগুণ।
পর্যবেক্ষক শিবিরের একাংশের বক্তব্য, এর আগে পুজোপার্বণ বা উৎসবের দরুন লকডাউনের তারিখ বদলানো হয়েছে। এ বার এত বড় পরীক্ষার জন্য পরপর দু’দিন লকডাউনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জোরদার কারণ ছিল।
এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষার থেকেও পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনোটাই বেশি ভাবাচ্ছে পরীক্ষার্থীদের। ক্যানিং থেকে প্রায় ৪৫ মিনিটের পথ জীবনতলা থানার মাথেরডিহি গ্রাম থেকে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের একটি তথ্যপ্রযুক্তি অফিসে নিট দিতে আসবেন অনন্যা মণ্ডল। তিনি জানান, পরীক্ষা শুরু বেলা ২টোয়। রিপোর্টিং টাইম ১২টা ২০ মিনিট। অনন্যা বলেন, “গাড়ি ভাড়া করে যাব ভেবেছিলাম। কিন্তু গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না ঠিকমতো। যারা যাবে বলছে, তারা অস্বাভাবিক ভাড়া চাইছে। তাই ভোর ৫টায় বাবার সঙ্গে মোটরবাইকে বেরোব। ঘটকপুকুরে বাইক রেখে বাস ধরে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছব। পরীক্ষা শেষ করে বাড়ি আসতে রাত ১১টা হয়ে যাবে।” অনন্যা মনে করেন, বাস ঠিকমতো চললে এই হয়রানি হত না।
বাড়ি থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে শিলিগুড়িতে সিট পড়েছে আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা অর্কায়ন চক্রবর্তীর। তাঁর বাবা পরিমলপ্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, “ও কী ভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রে যাবে, তা নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি। ৪-৫ ঘণ্টা লাগবে পৌঁছতে। গাড়িভাড়া যা চাইছে, তাতে শেয়ার করে যেতে পারলে সুবিধা হত। কিন্তু করোনার জন্য শেয়ার করে যাওয়া সম্ভব নয়। কোনও বন্ধুর বাড়িতে বা হোটেলে ওঠাও ঠিক নয়। পরীক্ষার পরে গাড়িতে বাড়ি পৌঁছতে রাত ১১টা-১২টা হয়ে যাবে। অগত্যা বন্ধুর বাড়িতে এক রাত থাকব ভাবছি।’’
বারুইপুরের সৌরদীপ সামন্তের সিট পড়েছে সল্টলেক সেক্টর টু-র একটি স্কুলে। তিনি বলেন, “স্বাভাবিক সময়ে পরীক্ষা হলে বাসেই পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে পারতাম। গাড়ি ভাড়া করার এত খরচ লাগত না।”
পরীক্ষার্থীরা জানাচ্ছেন, জেইই-র মতো নিটে অনলাইনে কম্পিউটারে পরীক্ষা হয় না। খাতায় লিখতে হয়। পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বেশি হলেও পর্যাপ্ত নয়। তাঁদের প্রশ্ন, পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা আরও বাড়ানো হল না কেন? নিট হবে এক দিনে। তাই পরীক্ষা কেন্দ্রে ভিড়ের আশঙ্কাও বেশি। তবে পরীক্ষার্থীদের রিপোর্টিং টাইম ভিন্ন ভিন্ন। ভিড় এড়াতে কারও রিপোর্টিং টাইম হয়তো ১১টা, কারও সাড়ে ১১টা, কারও বা ১২টা। পরীক্ষা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
পরীক্ষার্থীদের সমস্যা কাটানোর জন্য মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রশাসনের কাছ থেকে কোনও বার্তা মেলেনি। তারা কী ব্যবস্থা করবে, তা-ও অস্পষ্ট। অনেকেই আশা করছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবার, পুলিশ দিবসের অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে কিছু বলবেন। কিন্তু তাঁর বক্তব্যে নিট-প্রসঙ্গ ছিল না। আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, পরীক্ষা পিছোনোর জন্য কেন্দ্রের কাছে বার বার দাবি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ফল হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy