দাদা আব্বাসের হয়েও জবাব দিলেন বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। ফাইল চিত্র।
তৃণমূলের যাবতীয় আক্রমণের জবাব দিলেন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর একমাত্র বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। শনিবার এক ভিডিয়ো বার্তায় তিনি তৃণমূলের আক্রমণের জবাব দেওয়ার পাশাপাশি, আইনি লড়াইয়ের ইঙ্গিতও দিয়েছেন।
শুক্রবার জনসংযোগ যাত্রার শেষ দিনে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপের ম়ঞ্চ থেকে নাম না করে আইএসএফ বিধায়ককে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ এনে সংখ্যালঘুদের ভোট বিভাজনের অভিযোগ তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি, শুক্রবার রাতেই তৃণমূলের সমাজমাধ্যমে একটি হোয়াসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট প্রকাশ করা হয়। যেখানে দাবি করা হয়, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের সময় নওশাদের যোগাযোগ ছিল পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে। এমনকি, নির্বাচন কমিশন মারফত রাজ্যের আধিকারিকদের বদল করাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাইয়ের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ফুরফুরা শরিফের এই পিরজাদা। শনিবার কালীঘাট মিলন সংঘের মাঠে আয়োজিত সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এত ক্ষণ নওশাদ চুপ আছেন কেন? যদি হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট মিথ্যা হয় তা হলে তিনি আদালতে গিয়ে তা ভুল প্রমাণ করে দিন।’’
আইএসএফের প্রতিষ্ঠাতা আব্বাস সিদ্দিকির একটি ৬ সেকেন্ডের ভিডিয়ো দেখিয়ে কুণাল দাবি করেন, বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে দলীয় নেতৃত্বের। কুণালের দাবি, এই যোগাযোগ প্রমাণ করে কংগ্রেস ও সিপিএম ঘুরপথে আইএসএফ মারফত বিজেপির সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়াই করেছিল।
এই আক্রমণের জবাবে আনন্দবাজার অনলাইনকে দাদা আব্বাসের পক্ষ নিয়ে নওশাদ বলেন, ‘‘ওটা বিকৃত ভিডিয়ো। আমার দাদার বদনাম করতেই শাসকদল এই ধরনের বিকৃত করা ভিডিয়ো প্রকাশ করেছে। এ সব মিথ্যা প্রচারে আমাদের কিছু এসে যায় না। কারণ ৬ সেকেন্ডের ভিডিয়ো দেখিয়ে এক জন মানুষের মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। আমরা এই সংক্রান্ত বিষয়ে আইনজীবীদের পরামর্শ মতো চলব।’’
দাদা আব্বাসের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের জবাব দেওয়ার পাশাপাশি, নওশাদ তাঁকে করা আক্রমণের জবাবও দেন। নওশাদ বলেন, ‘‘প্রথমেই বলি আমি বিষয়টিকে পাত্তা দিই না। আসলে এটা তৈরি করা হয়েছে আমার মনকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিতে। আমি যে পঞ্চায়েত ভোটে মনোনিবেশ করে আছি, তা থেকে আমার মন সরাতেই এমনটা করা হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে যদি বিজেপির এক টাকারও লেনদেন প্রমাণ করতে পারেন, তা হলে ভাঙড়ের মানুষ আমাকে যে শাস্তি দেবেন তা আমি মাথা পেতে নেব। এই শাসকদল আমাদের বিরুদ্ধে একাধিক চক্রান্ত করেছে। আমাকে ভয় দেখানো হয়েছে, মারা হয়েছে, লোভ দেখানো হয়েছে। এবং অনৈতিক ভাবে জেল খাটানো হয়েছে। তার পরেও আমাকে আটকে রাখতে পারেনি। তাই এটা একটা নতুন গুজব তৈরি করা হয়েছে। যে ভাবে ২০২১ সালে এনআরসি ও সিএএ নিয়ে ভীতি তৈরি করে ভোট নেওয়া হয়েছে।’’
ভাঙড় বিধায়ক আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেছেন শনিবার। তাঁর কথায় ‘‘আমি আমার লোকজনকে বলেছি, যাঁরা যে সব কথা বিভিন্ন জায়গা আমাদের বিরুদ্ধে বলছেন বা অপপ্রচার করছেন, তার সব কিছুই সংরক্ষণ করে রাখতে। ভোটের সময় আমি এ বিষয়ে মাথা ঘামাব না। ভোট শেষ হলে আমি আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ করব। তাঁরা যে পরামর্শ দেবেন, সেই মতো এগিয়ে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy