Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
COVID Warriors

Corona Warriors: স্কুলে করোনাযোদ্ধা প্রাক্তনীদের কুর্নিশ

স্বাস্থ্য পরিষেবার পেশায় থাকা সেই সব সেবাব্রতী প্রাক্তন পড়ুয়াদের কুর্নিশ জানাচ্ছে নামখানার দেবনগর মোক্ষদা দিন্দা হাইস্কুল।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:৫৭
Share: Save:

অষ্টাদশ পর্বের মহাভারতে যুদ্ধ চলেছিল আঠারো দিন ধরে। আর ওঁরা আঠারো মাসেরও বেশি সময় ধরে অগ্রবর্তী যোদ্ধা হিসেবে লড়াই করে চলেছেন করোনা-অসুরের সঙ্গে। ওঁদের যুদ্ধ মানে রোগপীড়িত মানুষের সেবা। দিনের পর দিন বাড়ি যেতে পারেননি। হাসপাতালেই কেটেছে ও কাটছে বিনিদ্র রাত্রি। রোগীর শুশ্রূষা করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের অনেকে। স্বাস্থ্য পরিষেবার পেশায় থাকা সেই সব সেবাব্রতী প্রাক্তন পড়ুয়াদের কুর্নিশ জানাচ্ছে সুন্দরবনের নামখানার প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার দেবনগর মোক্ষদা দিন্দা হাইস্কুল।

ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক সঞ্জয় জানা বলেন, “দেশ জুড়ে আমাদের প্রাক্তনীরা রয়েছেন বিভিন্ন পেশায়। তাঁদের মধ্যে যাঁরা স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা যে-ভাবে প্রায় দু’বছর ধরে কাজ করে চলেছেন, তার জন্য আমরা গর্বিত। স্কুলে ১৯ মার্চ তাঁদের শ্রদ্ধা ও সংবর্ধনা জানানোর ব্যবস্থা করেছি তাঁদের।” এই সংবর্ধনা জ্ঞাপনের অন্তরালে রয়েছে আরও এক মহতী অভিপ্রায়। স্কুল-কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, দীর্ঘ করোনাকালে ওই সব প্রাক্তন পড়ুয়ার অভিজ্ঞতা বর্তমান ছাত্রছাত্রীদের সামনে তুলে ধরা দরকার। সংক্রমণভীতি উপেক্ষা করে তাঁরা কতটা নিরলস কাজ করে চলেছেন, তার বৃত্তান্ত শুনে যাতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে আগামী প্রজন্ম।

ওই স্কুলের প্রাক্তনী মুকুরদীপি রায় এখন দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসের (এইমস) চিকিৎসক। মুকুরদীপিবাবু দিল্লি থেকে ফোনে বললেন, “এই উদ্যোগের কথা স্কুল থেকে আমাকে জানানো হয়েছে। ওই সময়ে স্কুলে যাওয়ার চেষ্টা করব। গত দু’বছরে আমার চিকিৎসক জীবনের কঠিন অভিজ্ঞতার কথা বলব স্কুলের বর্তমান পড়ুয়াদের। আজকের প্রজন্ম যে-পেশাই বেছে নিক, কঠিন সময়ে প্রত্যেকেরই নিজের মতো করে মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। আমার অভিজ্ঞতা যদি আজকের পড়ুয়াদের চরিত্র গঠনের কোনও কাজে লাগে, তা হলে খুবই ভাল লাগবে।”

গ্রামীণ এলাকার দেবনগর মোক্ষদা দিন্দা হাইস্কুলে ছাত্রছাত্রী একসঙ্গে পড়ে। স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রী সুলতা পাত্র এখন আরামবাগ দক্ষিণ নারায়ণপুর রুরাল হাসপাতালের সিনিয়র পাবলিক হেল্থ নার্স। ফোনে সুলতাদেবী বলেন, “গত দু’বছর ধরে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে অতিমারির সঙ্গে লড়াই করতে করতে আমার মধ্যে একটা আলাদা আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। স্কুলের শিক্ষকেরা শুধু পড়াননি, কী ভাবে এক জন ভাল মানুষ হওয়া যায়, শিখিয়েছিলেন তা-ও। স্কুল থেকে অসীম জীবনীশক্তি পেয়েছি। তাই তো এখনও টানা কাজ করে গেলেও ক্লান্ত হই না। আমি ওই দিন স্কুলে গিয়ে বর্তমান পড়ুয়াদের সঙ্গে আমার পেশাগত জীবনের গত দু’বছরের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেব।”

প্রাক্তন ছাত্র অরূপ মাইতি জানান, স্কুলের যে-সব প্রাক্তনী স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের নম্বর জোগাড় করে ফোন করে ওই নির্দিষ্ট দিনে স্কুলে আসার নিমন্ত্রণ জানাচ্ছেন স্যরেরা। তাঁদের মতো প্রাক্তনীরা স্যরদের ওই কাজে সাহায্য করছেন।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয়বাবু বলেন, “কোভিড বিধি মেনে খোলা মাঠেই এই অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা আছে। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল হলেও এই প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়া নক্ষত্র তো কম নেই। ১৯ মার্চ স্কুলের মাঠে তেমনই কিছু নক্ষত্র জ্বলজ্বল করবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

COVID Warriors COVID-19 Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy