মুর্শিদাবাদ জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল তৃণমূলের জেলা লিগ্যাল সেলের চেয়ারম্যান দেবাশিস রায়কে। তার বদলে নতুন পাবলিক প্রসিকিউটর করা হয়েছে আবু বাক্কার সিদ্দিকিকে। তিনি অবশ্য বামপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন গণতান্ত্রিক আইনজীবী সঙ্ঘের মুর্শিদাবাদ জেলার যুগ্ম সম্পাদক পদে রয়েছেন। সেই সঙ্গে বাক্কারবাবু বহরমপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিও বটে। সরকারি ওই সিদ্ধান্ত বুধবার থেকেই কার্যকরী করার কথাও বলা হয়েছে।
আবু বাক্কার সিদ্দিকি বলেন, “ওই পদের জন্য আমাকে বেছে নেওয়ায় কৃতজ্ঞতা জানাই রাজ্য সরকারকে। যে কারণেই হোক তাঁরা আমাকে পিপি পদে বেছে নিয়েছেন। সরকারি ওই সিদ্ধান্তকে সম্মান দিতে হবে।”
এ দিকে আবু বাক্কার সিদ্দিকিকে পাবলিক প্রসিকিউটর পদে শাসক দল তৃণমূল বেছে নেওয়ার পর থেকেই বহরমপুর বার অ্যাসোসিয়েশন থেকে জেলার বিভিন্ন আদালতের বিভিন্ন আইনজীবী হতবাক। কেননা, ২০০৫ সালে জোড়া খুনের ঘটনায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর নাম জড়িয়ে যায়। সেই সময়ে আবু বাক্কার সিদ্দিকি ওই মামলা লড়েন। তার আগে ২০০৩ সালে ঝন্টু দাস মামলায় অধীর চৌধুরীর শ্যালক অরিত মজুমদারের হয়েও মামলা লড়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি তৃণমূল কর্মী কামাল শেখের খুনের ঘটনায় জেলা জজ আদালতে অধীর চৌধুরীর অন্তবর্তীকালিন জামিনের আবেদন করা হয়। ওই মামলায় অধীর চৌধুরীর হয়ে তিনি মামলা লড়েছিলেন।
এই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, বামপন্থী আইনজীবী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত আবু বাক্কারকে বেছে নেওয়ার পিছনে সরকারের কোনও উদ্দেশ্যে রয়েছে কী? অধীরবাবুর আইনজীবী পীযুষ ঘোষ বলেন, “বিগত বামফ্রন্টের আমল থেকেই শাসক দলের অনুগত আইনজীবীদের পাবলিক প্রসিকিউটর বা পিপি পদের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। বর্তমান শাসকদলও দেবাশিস রায়কে ওই পদে বসিয়েছিল। এখন যাঁকে পিপি করা হয়েছে, তাঁর যোগ্যতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। কিন্তু তিনি কখনও তৃণমূলের কাছের মানুষ ছিলেন বলে আমার জানা নেই।”
আবু বাক্কার বলেন, “আমি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নই। তবে আমার নিজস্ব রাজনৈতিক মতবাদ থাকতেই পারে। সব জেনেই ওই পদে বসানো হয়েছে। ফলে রাজনৈতিক মতবাদ নয় দায়িত্ব প্রাধান্য পাবে। রাজ্য সরকার যে কাজের আশা করে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, তা পালন করার চেষ্টা করব। রাজনৈতিক বিভেদ বা দৃষ্টিভঙ্গী প্রশ্রয় পাবে না।”
আর সদ্য অপসারিত তৃণমূলের জেলা লিগ্যাল সেলের চেয়ারম্যান দেবাশিস রায় বলেন, “আমাকে সরিয়ে দেওয়ার কোনও কারণ জানি না। কারণ জানতেও চাইনি। সরকারি সিদ্ধান্তের মান্যতা দিয়ে যাবতীয় দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy