সেতু বন্ধ, তাই নীচে গাড়ির ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
সেতু চালু হয়েছিল দু’মাস আগে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন ধুয়ো তুলে তিনদিন ধরে চালু সেতু বন্ধ রেখে উদ্বোধন করা হল বৃহস্পতিবার। সৌজন্যে পূর্ত (সড়ক) দফতর। মুখ্যমন্ত্রীকে অবশ্য দেখতে পেলেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। শোনা গেল সুদূর আসানসোল থেকে রিমোটের মাধ্যমে সেতুর উদ্বোধন করেছেন তিনি। এদিকে, তিনদিন ধরে সেতু বন্ধ থাকায় যানজটে নাকাল হতে হল যাত্রীদের। শুধু তাই নয়, সরকারি ওই অনুষ্ঠানকে ঘিরেও উঠল ‘আমরা-ওরা’র বিতর্কও। যাঁদের উদ্যোগে জঙ্গিপুরের এই রেল উড়ালপুলের তৈরি হয়েছে এদিনের ওই অনুষ্ঠানে তাঁরাই রইলেন অনাহুত।
প্রতিবাদে সড়ক আটকে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দারা। স্থানীয় বিধায়ক ও কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাবের বিধানসভা এবং রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পুত্র সাংসদ অভিজিত্ মুখোপাধ্যায়ের লোকসভা এলাকার মধ্যেই পড়ে ওই সেতুটি। অথচ তাঁদের কাউকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি এদিনের ওই সরকারি অনুষ্ঠানে। সাংসদ হিসেবে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই রেলমন্ত্রক মিঁয়াপুরে রেলের এই উড়ালপুলের কাজ শুরু হয়। পাঁচ বছর আগে কাজ হলেও বাকি ছিল সংযোগকারী রাস্তা তৈরির কাজ। সেই কাজ শুরু করতে রাজ্য পূর্ত দফতর দু’বার শিলান্যাসও করে। দুটি অনুষ্ঠানেই ডাক পেয়েছিলেন স্থানীয় বিধায়ক মহম্মদ সোহরাব। অথচ এদিনের সরকারি উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ডাক না পাওয়ায় ‘আমরা-ওরা’র এই বিভাজনে তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “রেলের উড়ালপুল তৈরি হয়েছে জঙ্গিপুরের সাংসদ ও আমার চেষ্টায়। অথচ উদ্বোধনে আমাকে একবার জানানোর সৌজন্যও দেখাননি প্রশাসনের কর্তারা। যান চলাচলের জন্য মাস দুয়েক আগে এই রেল সেতুর সড়ক পথ খুলে দিয়েছিল পূর্ত (সড়ক) দফতর। তারপরে সেতু বন্ধ রেখে ঘটা করে উদ্বোধনের নামে সরকারি অর্থ অপচয়ের কোনও প্রয়োজন ছিল না। বৃহস্পতিবার সেই সেতু সুদূর আসানসোল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কীভাবে উদ্বোধন করলেন তিনিই জানেন।”
এদিনের ওই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সুতির বিধায়ক তৃণমূলের ইমানি বিশ্বাস। তিনি বলেন, “সরকারি অনুষ্ঠানে ওই সাংসদ, বিধায়করা কেন আমন্ত্রিত হননি তা আমি জানি না। তবে আমাকে পূর্ত (সড়ক) দফতর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। সেই মতো আমি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলাম।”
এ দিনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাজির থাকার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের ধন্যবাদ দেন পূর্ত (সড়ক) দফতরের জঙ্গিপুরের সহকারি বাস্তুকার রাজেন্দ্র প্রসাদ মণ্ডল। তবে কাকে কীভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি তিনি। কোনও মন্তব্য করেননি ওই দফতরের দক্ষিণবঙ্গের মুখ্য বাস্তুকার দিলীপকুমার বসুও। তিনি জানান, ১৩.৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি এই সেতুটি তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি। কাজ শেষ হয়েছে চলতি বছর ২৬ সেপ্টেম্বর।
মিঞাপুরের এই সড়ক সেতুর উদ্বোধনস্থল থেকে ২০০ মিটার দূরে জরুর গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস। প্রধান সিপিএমের সাবানা বিবি বলেন, “সেতুর সড়ক পথ তৈরির সময় পঞ্চায়েত নানা ভাবে সাহায্য করেছিল পূর্ত দফতরকে। অথচ সিপিএমের পঞ্চায়েত বলে কোনও আমন্ত্রণ পায়নি কেউ।” একইভাবে অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ না পেয়ে ক্ষুব্ধ রঘুনাথগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএম সভাপতি রেখা ঘোষ। তিনি বলেন, “সরকারি অনুষ্ঠানে বিভাজন কেন?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy