চতুর্থ স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ স্বামীর বিরুদ্ধে। নিজস্ব চিত্র।
দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে প্রেম দিবস কাটাতে বাধা দেওয়ায় চতুর্থ স্ত্রীকে পিটিয়ে এবং গলা টিপে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। সোমবার এই ঘটনা ঘটেছে নদিয়ার থানারপাড়া এলাকার হায়তাপাড়া গ্রামে। পুলিশ নিহত বধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। অভিযুক্ত স্বামী-সহ মোট ৩ জনের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে অভিযোগ।
নিহত রুবিয়া বিশ্বাস (২৬)-এর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় অভিযুক্ত টনি মণ্ডলের। তাঁদের দাবি, মাস খানেক আগে আবার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয় টনির। রুবিয়ার পরিবারের সদস্যদের দাবি, প্রাক্তন স্ত্রীর আবদার রাখতে ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে তাঁর সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা ছিল টনির। তাঁদের আরও দাবি, রুবিয়া সেই পরিকল্পনা টের পেয়ে প্রতিবাদ জানান। অভিযোগ, এর পরই রুবিয়াকে পিটিয়ে এবং গলা টিপে খুন করে টনি। আরও অভিযোগ, রুবিয়ার মৃত্যুর পর তাঁর মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে তা আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টাও করছেন টনি এবং তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। রুবিয়ার বাবা রকিব বিশ্বাসের অভিযোগ, ‘‘টনির একাধিক বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। ও অত্যন্ত খারাপ চরিত্রের মানুষ। আমার মেয়েকে খুন করে মুখে বিষ ঢেলে দিয়েছে। ওর ফাঁসি চাই।’’
যদিও টনির মা নাদিরা বিবি মণ্ডল সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘বাড়িতে অশান্তির জেরে বৌমা আত্মহত্যা করেছেন। এখানে আমাদের কী দোষ!’’ রুবিয়ার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কৃশানু রায় বলেন, ‘‘তরুণীর পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজ চালানো হচ্ছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অবস্থাপন্ন পরিবারে জন্ম টনির। দীর্ঘ দিন থেকে তিনি পণ্য পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর লরি এবং পিকআপ ভ্যান রয়েছে। প্রতিবেশীদের দাবি, নিত্যনতুন বাইক, দামি মোবাইল, চোখধাঁধানো পোশাক ব্যবহারে অভ্যস্ত টনি। সেই সঙ্গে বহু তরুণীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল বলেও স্থানীয়দের দাবি। প্রতিবেশীদের সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের চণ্ডীপুরে প্রথম বিয়ে হয় টনির। সেই স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর পলাশিপাড়ার চিলাখালি গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন টনি। কিছু দিনের মধ্যে তাঁকে বিয়ে করেন টনি। তবে দ্বিতীয় বিয়েও বেশি দিন টেকেনি টনির। দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গেও বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁর। প্রতিবেশীদের দাবি, এর পর মুর্শিদাবাদের গোঘাট এলাকার আর এক তরুণীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন টনি। স্থানীয়দের দাবি, তাঁকেও বিয়ে করেছিলেন টনি। তবে টনির ‘তৃতীয় স্ত্রী’কে কোনও দিন হায়তাপাড়ার বাড়িতে দেখা যায়নি বলেও জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। এর মধ্যেই হায়তাপাড়ার পাশের গ্রাম গোপালনগরের রুবিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় তাঁর। ২০২০ সালের শেষের দিকে রুবিয়াকে বিয়ে করেন টনি। রুবিয়াও তাঁর প্রথম স্বামী এবং সন্তানকে ছেড়ে টনির সঙ্গে নতুন জীবন শুরু করেন। মোসলেম মণ্ডল নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘শুনেছি দ্বিতীয় স্ত্রীকে আবার ঘরে আনবে বলে রুবিয়ার উপর অত্যাচার করত। তাঁর মৃত্যু আত্মহত্যা না খুন তা খতিয়ে দেখুক পুলিশ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy