সুপ্রিম কোর্টের চাকরি বাতিলের রায় ঘোষণার পর দিন যত গড়াচ্ছে, ততই জেলার স্কুলগুলি পরিচালনার ক্ষেত্রে নিত্যনতুন সমস্যায় পড়ছেন কর্তৃপক্ষ। তার মধ্যে অন্যতম চ্যালেঞ্জ, প্রতি দিন মিডডে মিল ঠিক মতো পড়ুয়াদের মুখে তুলে দেওয়া।
নদিয়ার কোনও স্কুলে ১৩ জন তো কোনও স্কুলে আট বা সাত জন শিক্ষক চাকরি হারিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও এঁদের অধিকাংশই স্কুলে আসছেন না। এক ধাক্কায় এত জন শিক্ষক চলে যাওয়ায় খুব স্বাভাবিক ভাবেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ওই সব স্কুলের পরিকাঠামো। বিদ্যালয় প্রধানেরা জানাচ্ছেন, মিডডে মিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ সামাল দিতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। যেমন, করিমপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের যে আট জন শিক্ষিকার চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁদেরই এক জন মিডডে মিলের বিষয়টি দেখভাল করতেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষিকা মঞ্জু সরকার অন্যদের নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থা করেছেন। ওই স্কুলে প্রতি দিন প্রায় ১২০০ মেয়ের মিডডে মিলের আয়োজন করতে হয়।
অন্য দিকে, মুরুটিয়ার গোয়াবাড়ি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের যে ছ’জন চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এক শিক্ষাকর্মীও রয়েছেন যিনি মিডডে মিলের বিষয়টি দেখতেন। পরিচালন সমিতির সভাপতি কার্তিক মণ্ডল বলেন, “উনি চলে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বিকল্প কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে।”
পলাশির মীরা হাইস্কুলের ১১ জন শিক্ষক এক সঙ্গে চলে যাওয়ায় কীভাবে মিডডে মিল চলবে তা ভেবে পাচ্ছেন না প্রধান শিক্ষক মানিক ঘোষ। তাঁর কথায়, “আমাদের স্কুলে জায়গা খুব ছোট। খাবার ঘর নেই। প্রতি দিন সাত-আট জন শিক্ষকের একটা দল ছেলেরা কী ভাবে মিডডে মিল খাবে, সেই বিষয়টা তদারক করতেন। দলটাই ভেঙে গিয়েছে।” ধুবুলিয়া নিবেদিতা গার্লস হাইস্কুলে তিন জন চাকরি হারানোর পর এখন স্থায়ী শিক্ষকের সংখ্যা মাত্র পাঁচ, প্রধান শিক্ষককে নিয়ে। সাত জন পার্শ্বশিক্ষক। প্রধান শিক্ষিকা চন্দনা ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের ৫৯৬ জন পড়ুয়া। চলে যাওয়া দুই শিক্ষক মিডডে মিলের হিসাব দেখতেন। এখন পুরো ব্যবস্থাটাই এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)